মগবাজার ওয়্যারলেসে সৈয়দ হাসান ইমামের বাসায় গিয়ে তাঁর হাতে দোলনচাঁপার তোড়া তুলে দিতেই প্রবীণ এই অভিনেতা চোখ বন্ধ করে তার ঘ্রাণ নিলেন। শুরু হলো আলাপ। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করা এই মানুষটা বারবার স্মৃতি হাতড়ে ফিরে যাচ্ছিলেন অতীতে। আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কথা চলল বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির ততীত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জিনাত শারমিন।
প্রশ্ন: কেমন আছেন?
সৈয়দ হাসান ইমাম: ভালো আছি। শরীরটাও আগের চেয়ে বেশ ভালো।
প্রশ্ন: চলচ্চিত্র দিয়েই শুরু করি। আপনার পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা কেমন?
সৈয়দ হাসান ইমাম: আগের চেয়ে ভালো, এটা বলতেই হবে। কয়েক বছর আগেও কেমন একটা গর্তে পড়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। সেটা কেটে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকেও চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির জন্য অনুকূল, এ রকম বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ও হচ্ছে। আর এখন অনেক শিক্ষিত, কাজ জানা, সচেতন তরুণ আসছেন। অন্তত ১০ জন নির্মাতা ভালো কাজ করছেন। তাঁদের সংখ্যা আরও বাড়বে। আর আমার বিশ্বাস, আমরা খারাপ সময়টা পার করে এসেছি। সামনে আরও ভালো সময় আসবে।
প্রশ্ন: আপনাকে সর্বশেষ দেখা গেছে ‘গহীনের গানে’ এরপর নতুন কোনো ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন?
সৈয়দ হাসান ইমাম: বঙ্গবন্ধুর ছবিটাতে একটা চরিত্র করছি। ওই যে শ্যাম বেনেগাল যেটা বানাচ্ছে। এখনই চরিত্র নিয়ে কিছু বলা যাবে না। আর নাটক তো করছিই।
প্রশ্ন: রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘পাতা ঝরার দিনে’র ওই হারিয়ে যাওয়া বৃদ্ধ মানুষটাকে আমি মাঝে মাঝে খুঁজি…
সৈয়দ হাসান ইমাম: আমার নাতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। ও নাটকটা দেখে আমাকে ফোন করল। ওর মন খারাপ, দাদু হারিয়ে গেছে। তারপর নিজেই বলল, দাদু আসলে হারায়নি। দাদুকে খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু সেটা আর টিভিতে দেখায় না।
প্রশ্ন: জানতে ইচ্ছা করছে, ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র, যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রের পরিস্থিতিটা কেমন ছিল?
সৈয়দ হাসান ইমাম: যখন পালঙ্ক হলো, রাজেন তরফদার পরিচালনা করেছিলেন। এটা ১৯৭৫ সালের দিকের ঘটনা, নীতিমালা ছাড়াই এই কো-প্রোডাকশনটা হলো। ‘পালঙ্ক’ একটা খুব নামকরা গল্প, অচিন সেন গুপ্তের। দেশভাগের ওপর। সে সময় বেশ কিছু বাস্তব এবং শিল্পসম্মত ছবি হয়েছে। আমার সঙ্গে উত্তমকুমারের কথা হলো, তিনি একটা কো–প্রোডাকশন আমার সঙ্গে করতে চাইলেন। সেটার নাম ছিল ‘বেগম মেরি বিশ্বাস’। বললেন, তিনি ডিরেকশন দেবেন, কিন্তু অভিনয় করবেন না। তো অভিনয় না করলে, পরিচালক উত্তমকুমারের ততটা মূল্য নয়, যতটা অভিনয়শিল্পী হিসেবে। তাই আমি চেয়েছি যে তিনি অভিনয় করুক। তো আমি তাঁকে বললাম যে আপনাকে অভিনয় করতে হবে, তিনি রাজি হলেন। এটা সিরাজ উদদৌলার সময়কার গল্প। বললেন সিরাজ চরিত্রটা ঢাকার থেকে কাউকে নেন, আমি ওয়াটসন করব, সাহেবের চরিত্রটা। আমি রাজি হলাম। পরবর্তী সময়ে ঢাকায় এসে একটা ভারতবিরোধী সমস্যা দেখা দিল। তখন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক সহায়তা করেছিলেন। অনেক শিল্পীই করেছিলেন, আমাদের এখানে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের একটা অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার ছিল। কিছু ছেলে গিয়ে তাঁর হাত থেকে মাইক কেড়ে নিল, গান গাইতে দিল না। তখন আমি দেখলাম যে এই অবস্থায় কো–প্রোডাকশন করাটা ঠিক হবে না। পরে আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করলাম। যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা করলাম। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বোম্বে গিয়ে কথাবার্তা ফাইনাল করে ১৯৮৫ সালে ‘অবিচার’ সিনেমাটা করলাম। ওদের ওখানে টাইটেলটা ফ্রি ছিল না বলে ‘অন্যায় অবিচার’ নামে রিলিজ করল। এখানে তারা মিঠুন চক্রবর্তী ও উৎপল দত্তকে দুটি মেজর ক্যারেক্টার নিল, আমি তখন মেয়ে দুজনের চরিত্রে নূতন ও রোজিনাকে নিলাম। ক্যামেরাতে আমি নিলাম বশিরকে। এভাবে ব্যালান্স করে আমরা ছবিটা করলাম। ছবিটা সুপারহিট হলো, তখন অনেকে এই ফর্মুলাতে এল কো–প্রোডাকশন করতে। তবে তাদের অনেকে নীতিমালা অমান্য করতে আরম্ভ করল। দেখা গেল, মেজর আর্টিস্ট সবগুলো ইন্ডিয়া থেকে নিল, মাইনর আর্টিস্ট নিল বাংলাদেশ থেকে। পরে সংখ্যায় মিলিয়ে দিল। বা তাদের লোকেশনে শুটিং হলো, টাকা ব্ল্যাকে পাঠিয়ে দিল। এ রকম নানা ফন্দি করে তারা করতে আরম্ভ করল, তখন আমাদের এখানে আন্দোলন শুরু হলো। যদিও প্রযোজকদের লাভ হচ্ছিল কিন্তু এফডিসি ও আমদের শিল্পীদের ক্ষতি হচ্ছিল। তারপর হতে হতে এমন হলো যে প্রায় সবই ওদের ওখানে, আবার ওদের ওখানে রিলিজ হওয়ার পর আমাদের এখানে রিলিজ হচ্ছে কো–প্রোডাকশন নামে। তখন নীতিমালার অপপ্রয়োগের ফলে আন্দোলন হলো এবং এর ফলে ২০১২ সালে গিয়ে আরেকটি নীতিমালা হলো। যেটাও সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না বলে ২০১৭ সালে গিয়ে আবার এটিকে আবার সংশোধন করা হলো। ‘অবিচার’ কিন্তু বাংলা এবং হিন্দি দুই ভাষাতেই হয়েছিল। হিন্দিটা অল ইন্ডিয়ায় রিলিজ হয়। বাংলাটা পশ্চিমবঙ্গ আর আমাদের বাংলাদেশে রিলিজ হয়। নতুন নীতিমালার যে প্রয়োগ, এখানে আমাদের আপত্তি আছে। সেন্সর বোর্ড সেটিকে কেন পাস করবে, কেন এগুলো চলবে, নীতিমালাবহির্ভূত ছবিগুলো কীভাবে সেন্সর বোর্ড সার্টিফিকেট পেল, কেন সেন্সর বোর্ডের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বা হচ্ছে না।
প্রশ্ন: টেলিভিশনের বিষয়টাতে যদি আসি, ভারতের প্রায় সব চ্যানেল আমাদের দেশে চলছে কিন্তু…
সৈয়দ হাসান ইমাম: আমি টেলিভিশন এবং ফিল্মটাকে আলাদা করছি। ওখানকার ফিল্মগুলো টেলিভিশনে দেখানো হচ্ছে। তুমি তো আমার সঙ্গে টেলিভিশন নিয়ে আলাপ করতে আসোনি। এটা একটা আলাদা প্রসঙ্গ। এই বিষয়টা নিয়েও আমার অনেক ক্ষোভ আছে। বুদ্ধবাবু (বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য) যখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন ওরা একবার আমাকে শ্রেষ্ঠ বাঙালির পদক দিল। সেখানে বুদ্ধবাবুকে আমি বললাম, সৌমিত্র আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও ছোটবেলার বন্ধু। তাকে আমার বাংলাদেশের সবাই চেনে। কিন্তু আমাকে এ দেশের তেমন কেউ চেনে না। অথচ আমিও অনেক ছবি করেছি। একসময় ‘নায়ক’ তারপর মুক্তিযুদ্ধ করেছি। একসময় দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছে, ১৪ বছর কাজ করতে পারিনি, আবার এখন করছি। সেই বিরতি ছাড়া সৌমিত্রের সঙ্গে আমার কোনো তফাত নেই। আমিও ভারতীয় বহু ছবি করেছি। ‘টিনটোরেটোর যীশু’, গৌতমের দুটি ছবি, ‘মনের মানুষ’, ‘পদ্মা নদীর মাঝি’। আমরা তো কারও চেয়ে কেউ খারাপ অভিনয় করিনি। খয়ের অসাধারণ অভিনয় করেছে পদ্মা নদীর মাঝিতে। শিল্পীদের মান হিসেবে আমাদের সঙ্গে তাদের কোনো পার্থক্য নেই। সম্মানে কেন থাকবে? উত্তমকুমার সুপারস্টার হয়েছে, সৌমিত্র হয়নি। কিন্তু বুদ্ধিজীবী মহল আবার সৌমিত্রকে পছন্দ করত বেশি। এ রকম পার্থক্য থাকবেই, সারা পৃথিবীতেই আছে। আমাদের শাকিব খানের যেমন চেহারা, ফিগার আছে, ওখানে পপুলার হচ্ছে, আরও অনেকেই হতে পারত। প্রমাণস্বরূপ বলছি, আমাদের আলমগীর কুমকুমের যে সহকারী ছিল স্বপন সাহা, সে যখন ইন্ডিয়া চলে গেল। ১০ বছর সে ইন্ডাস্ট্রি ডমিনেট করেছে, পরিচালক হিসেবে, কমার্শিয়াল পরিচালক হিসেবে। একেক দিনে চার–পাঁচটা ছবির শুটিং করত। একেক জায়গায় একেকটা অ্যাসিস্ট্যান্ট দিয়ে দিত। ও গাড়ি করে ঘুরত। এত পপুলার ছিল স্বপন সাহা। তো সে যদি কুমকুমের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর থেকে পশ্চিমবঙ্গের মোস্ট ওয়ান্টেড ডিরেক্টর হতে পারে এবং আমাদের গল্পগুলো নিয়ে, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ইত্যাদি। আমাদের পরিচালক, গল্প, অভিনেতা–অভিনেত্রী সবাই সেখানে সুপারহিট হচ্ছে, তাহলে আমাদের সিনেমা সেখানে চলবে না কেন?
প্রশ্ন: একসময় তো আমাদের এখানকার চলচ্চিত্রের অবস্থা সার্বিকভাবে ভালো ছিল, এখনকার এই যে একটা ক্রাইসিস সময় যাচ্ছে, এর প্রেক্ষাপটটা কী?
সৈয়দ হাসান ইমাম: টেলিভিশন আসার পর আমি আর আমার স্ত্রী একবার হলিউডে গেলাম, ওদের সঙ্গে আলোচনা করলাম যে তোমরা কীভাবে এটাকে ম্যাচ করলে? কারণ, সিনেমার ব্যবসা তো টেলিভিশনের চাপে পড়ে যাবে বা বন্ধ হয়ে যাবে। তো তারা বলল যে, টেলিভিশন যেটা দিতে পারে না, তারা সেটা প্রোভাইড করে। যেমন সাউন্ড, হলের সাউন্ড টেলিভিশন দিতে পারে না। বড় ওয়াইড স্ক্রিন ইত্যাদি। টেকনোলজি দিয়ে টেকনোলজিকে বিট করল। তারা বলল, তাদের রিসার্চ সেল আছে, এই সেল সারা বছর গবেষণা করে। তাদের বিশাল স্ক্রিনে সিনেমা দেখার ব্যবস্থা ছিল। গাড়ি পার্ক করে তারা দাঁড়িয়ে, বসে সিনেমা দেখত। এখন এই স্ক্রিনটাতে তাদের মার্কেটের যতটুকু জায়গা, তার বাইরেও লোক ছবি দেখতে পারত। এখন ওখানে শিশুদের উপযোগী নয়, এমন ছবিও দেখানো হতো। একদল লোক মামলা করে কোর্টে অর্ডার দিয়ে বন্ধ করে দিল। তখন রিসার্চ সেল সেটাকে এমনভাবে বসাল যে এই নির্দিষ্ট এরিয়ার বাইরে থেকে এই স্ক্রিন আর দেখা যাবে না। সেই ড্রাইভ ইন সিনেমাও এখন আর নেই বললেই চলে। তার বদলে নতুন নতুন আরও ব্যবস্থা এসেছে। গ্রমোফোন রেকর্ড উঠে গেছে, সিডি এল, সিডি উঠে গেল, এখন পেনড্রাইভ ইত্যাদি। বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তো সব পাল্টে যাবে। এখন এই পরিবর্তনের সঙ্গে তো খাপ খাইয়ে নিতে পারতে হবে। আমরা পারিনি, তাই আমাদের ধস নামল। একটা ছেলে থিয়েটার করে পেট চালাতে পারে? তাকে আরেকটা চাকরি বা ব্যবসা করতে হয়, করে থিয়েটার করতে হয়। অর্থাৎ এই মাধ্যমটা জনগণের টাকায় চলে না। কিন্তু যেটা চলে, চলত, সেটা উঠিয়ে দিয়েছে। আমি যখন নায়কের চরিত্রে অভিনয় করে ৭ হাজার টাকা পাই, তখন অমলেন্দু বিশ্বাস ৩০ হাজার, জ্যোৎস্না বিশ্বাস ৩০ হাজার টাকা পায় যাত্রা করে। তাকে তো সরকার থেকে অনুদান দিতে হয় না। যাত্রাকে প্রসেনিয়াম থিয়েটার দিয়ে তাড়িয়ে দিলাম। সরকারকে বললাম, আমাদের টাকা দাও, টাকা দাও, আমরা সংস্কৃতি করছি, এটা কার টাকা? এই টাকা গরিবের টাকা, যারা যাত্রা দেখত তার টাকা! কেন? গম্ভীরা চলত, গম্ভীরা উঠে গেল, কেন উঠে গেল? আমার সংস্কৃতির বিবর্তন কেন হলো না? কেন? রবীন্দ্রনাথ একটাও যাত্রা লিখেছেন? কাজী নজরুল? কারা লিখল? গ্রামের অশিক্ষিত লোকেরা, সে তো উঠেই যাবে। জনগণ রিজেক্ট করলে উঠে যাবে, সেখানে দুঃখ করার কিছু নেই। একটি যাত্রার বিজ্ঞাপন দিয়ে দেখ মাঠে কত লোক হয়। এই ঢাকা শহরেই দেখ, হাজার হাজার লোক যাবে, এক পয়সাও ডোনেশন দিতে হবে না। ওর থেকেই ওরা লাভ করবে, কেন? কারণ, এটা জনগণের সংস্কৃতি, তাদের মাটির সঙ্গে, রুটের সঙ্গে মিশে আছে। সবকিছু একটা সীমাবদ্ধতার ভেতর সংকীর্ণ করে ফেলা হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, বৈশ্বিকভাবেই আমদের অধঃপতন ঘটেছে, না হলে ট্রাম্পের মতো একজন মানুষ কি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়?
প্রশ্ন: এই মুহূর্তে আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ কী হতে পারে?
সৈয়দ হাসান ইমাম: জরুরি হলো চলচ্চিত্র বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের যুক্ত করতে হবে। আর পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া শিখতে হবে।
প্রশ্ন: শুনেছি ক্লাস থ্রিতে থাকতে সিনিয়রের কথা শুনে ‘ইংরেজদের হাত থেকে পুরস্কার নেব না’ বলে মিছিল করে বের হয়ে সাংস্কৃতিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান থেকে চলে আসা দিয়ে রাজনীতির শুরু।
সৈয়দ হাসান ইমাম: (হেসে) তখন আমার ছয় বছর বয়স। অনেকে বলে যে আপনি অভিনয় করেন, আবার রাজিনীতি কেন? আমি বলি, আগে আমি মানুষ তো। আমি ১২ বছর বয়স থেকেই সক্রিয় রাজনীতি করি।
প্রশ্ন: আপনি বলেন যে, আমি জাতীয় রাজনীতি করি, দলীয় রাজনীতি করি না…
সৈয়দ হাসান ইমাম: হ্যাঁ, ঠিক তাই। আমি কেবল অভিনেতা নই কিন্তু। সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী আমার সমান পরিচয়। বাকি জীবনটাও এই দুই করেই কাটাতে চাই।
প্রশ্ন: দর্শকদের জন্য কিছু বলার আছে?
সৈয়দ হাসান ইমাম: হ্যাঁ, অবশ্যই। বাংলাদেশের দর্শক হিসেবে আমার হীনম্মন্যতার কোনো সুযোগ নেই। ভালো কাজ হচ্ছে। আমাদের কেবল সেটা গ্রহণ করতে হবে। সেটা যদি দর্শক করে ফেলে, তাহলে নিয়মিত পাল্লা দিয়ে ভালো কাজ হবে। বিদেশি জিনিসপত্রের দিকে না তাকিয়ে আমাদের শুধু নিজেদের কাজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। ভুলবেন না, আপনার মা যদি বড় পর্দার নায়িকার মতো সুন্দরী না-ও হয়, তা–ও সে আপনার মা।