বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ৮ গুন ছোট তেল সমৃদ্ধ এই দেশটি পর্যটকদের জন্য একটি স্বপ্নের জায়গা। দেশটি ছোট হলেও এখানে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থান।
কুয়েত টাওয়ার: কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটিতে অবস্থিত এই টাওয়ারটি ১৯৭৯ সালে উদ্বোধন করা হয়। এই টাওয়ারটি মূলত তিনটি সেলেন্ডার টাওয়ার এর সমন্বয়ে গঠিত। মূল টাওয়ারটি ১৮৭ মিটার লম্বা এবং এর দুটি অংশ রয়েছে। এর নিচের অংশটি পানির ট্যাংক এবং ওপরের অংশটি একটি রেস্টুরেন্ট। এই মূল টাওয়ারটির উপর থেকে আপনি সমগ্র কুয়েত সিটিকে উপভোগ করতে পারেন। এখানকার অপর টাওয়ারটি ১৪৭ মিটার লম্বা, যেটির পুরোটাই পানির ট্যাংক হিসেবে ব্যবহার হয়। তৃতীয় টাওয়ারটি অন্য দুটি টাওয়ার মেইনটেন করার কাজে ব্যবহার হয়। কুয়েত টাওয়ারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় রাতের সময় যখন রংবেরঙের আলোকসজ্জা দিয়ে এর চারিদিক সজ্জিত থাকে। আর এর পাশেই রয়েছে এমিউজমেন্ট পার্ক Amusement and Recreational Park । কুয়েতের সবচেয়ে বড় এই এমিউজমেন্ট পার্কটি কুয়েত সিটি হতে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ।
Kuwaiti liberation Tower কুয়েতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উচু বিল্ডিং যেটি প্রায় ৩৭২ মিটার লম্বা। এটি বিশ্বের অন্যতম লম্বা টেলিকমিউনিকেশন টাওয়ার এবং এটি আইফেল টাওয়ারের চেয়েও প্রায় ৪০ মিটার লম্বা। এই টাওয়ারটির রাতের আলোকসজ্জা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে থাকে। Kuwait এর Al-Soor এর পাশেই রয়েছে ice skating rink । ৮৩৯৮ স্কয়ার মিটার আয়তনের এই Ice Skating Rink টি নির্মাণ করা হয় ১৯৮০ সালে। যারা স্কেটিং করে আনন্দ উপভোগ করতে চায় তাদের উপস্থিতি এখানে বেশ চোখে পড়ে
গ্রীন আইল্যান্ড: গ্রীন আইল্যান্ড হলো কুয়েতের কৃত্রিম দ্বীপ যেটি ১৯৮৮ সালে উন্মুক্ত করা হয়। এবং পারস্য উপসাগরে এটি প্রথম কৃত্রিম দ্বীপ। কুয়েতে এটি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি জায়গা যার আয়তন ৭৮৫০০০ বর্গমিটার। এই আর্টিফিশিয়াল দ্বীপটিতে পর্যটকদেরকে আকর্ষণ করার মতো অনেক কিছু রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল লেক. বিশেষ করে এখানে শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা বিনোদনের জায়গা যেখানে শিশুরা সাইক্লিংসহ অন্যান্য বিনোদন উপভোগ করতে পারে।
Failaka island কুয়েত সিটি হতে ২০ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে পারস্য উপসাগরে অবস্থিত। এটি প্রায় ১৪ কিলোমিটার লম্বা। দ্বীপটি এক সময় মেসোপটেমিয়া সভ্যতার অংশ ছিল। আর এক সময় এই Failaka island টি রাজা নেবুচাদনেজার -2 এর আওতায় ছিল। Cuneiform লিপির অনেক documents এই দ্বীপে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল যেটি এই দ্বীপে বেবিলোনীয় সময়কার মানুষের অস্তিত্বকে প্রমাণ করে। সেই সময়কার ঐতিহ্যবাহী বাড়ি এবং প্রাসাদ এখনো এখানে লক্ষ্য করা যায়। তবে পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ঐ সময়ের অনেক ভবন ধ্বংস হয়ে যায়।
বর্তমানে কুয়েতের এই দ্বীপটি পর্যটকদের একটি প্রিয় জায়গায় পরিণত হয়েছে আর সেজন্যই প্রতিদিন এই দ্বীপটিতে হাজার হাজার পর্যটকের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়।
কুয়েত মিউজিক্যাল ফাউন্টেন: কুয়েত মিউজিক্যাল ফাউন্টেন কুয়েতের একটি জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা। এটি কুয়েতের রাজধানী কুয়েত সিটির কাছেই অবস্থিত, যার ফলে পর্যটকরা সেখানে সহজেই যেতে পারেন। এই মিউজিক্যাল ফাউন্টেন বা ড্যান্সিং ফাউন্টেন এ .২২০টি ঝরনা রয়েছে। যখনই ঝর্ণাটি চালু করে দেওয়া হয়, তখনই মিউজিকের তালে তালে কালারফুল এই দৃশ্য ভেসে উঠে যা দেখে পর্যটকরা ভালোই মজা পেয়ে থাকেন।
দেশটি ছোট হলেও এর রয়েছে অনেক বৈচিত্রময় পর্যটন স্থান। এই দেশটিতে আপনার কখনও যদি যাওয়ার সুযোগ হয়, তাহলে কোন জায়গাটিতে আপনি প্রথম যেতে চাইবেন? তা জানিয়ে দিন আমাদের কমেন্ট বক্সে । আর আপনাদের মধ্যে কেউ এসব জায়গায় গিয়ে থাকলে অবশ্যই সেসব বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেও ভুলবেন না।