উম্মে সালমা তামান্না: যকৃতে চর্বি জমাকে ফ্যাটি লিভার বলে। ফ্যাটি লিভার সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে—অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ও নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। আমাদের দেশের মানুষের নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হওয়ার প্রবণতা বেশি।
সাধারণত অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত মাত্রায় ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কম গুড কোলেস্টেরল বা এইচডিএল, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, কার্বোহাইড্রেট ও চর্বির বিপাকে সমস্যার কারণে যকৃতে চর্বি জমে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। এই তিনটির মধ্যে সঠিক খাদ্যাভ্যাসই সবচেয়ে জরুরি।
যা খাবেন: কোলিন যুক্ত খাবার: যকৃতের চর্বি কাটাতে কোলিন যুক্ত খাবার, যেমন চিনাবাদাম, ইলিশ, পুঁটি মাছ, চিংড়ি, স্যামন, ফুলকপি, সয়াবিন ও ডিম নিয়মিত খেতে হবে।
সবুজ শাকসবজি: প্রতিদিন সবুজ শাক, বিশেষ করে পালংশাক, ব্রকলি, শালগম ও বাঁধাকপি খাবারের তালিকায় রাখতে হবে।
জটিল শর্করা: শর্করার উৎস হিসেবে জটিল আঁশযুক্ত শর্করা বেছে নিন। যেমন ওটস, ব্রাউন রাইস, হোল গ্রেইন আটা ইত্যাদি।
ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার: ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার যকৃতের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। সামুদ্রিক মাছ, যেমন টুনা, সার্ডিন, স্যামন, কাঠবাদাম, ওয়ালনাট, ফ্ল্যাক্সসিড ও অলিভ ওয়েল খেতে হবে নিয়মিত।
বিচি–জাতীয় খাবার: শিমের বিচি, সূর্যমুখীর বিচি, কুমড়ার বিচি ও রেড কিডনি বিনসে প্রচুর ভিটামিন-ই এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে। এই উপাদান ফ্যাটি লিভারের জন্য উপকারী।
দুগ্ধজাত খাবার: প্রতিদিন পরিমাণমতো দুধ বা দই খেতে হবে। এতে বিদ্যমান প্রোটিন যকৃৎকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
যা খাবেন না
শর্করা, বিশেষ করে সহজ শর্করা কমিয়ে দিতে হবে। অতিরিক্ত শর্করাই চর্বি হিসেবে যকৃতে জমা হয়। তাই সাদা ভাত, মিষ্টি ও চিনিযুক্ত খাবার, কোমল পানীয়, চকলেট, আইসক্রিম, মিষ্টান্ন বা ডেজার্ট ও বেকারির খাবার যথাসম্ভব কমিয়ে দিন। এ ছাড়া অ্যালকোহল, সাদা আটা, তেলে ভাজা খাবার, কাঁচা লবণ, রেড মিট (গরু-খাসির মাংস) এড়িয়ে চলতে হবে।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, ইবনে সিনা কনসালটেশন সেন্টার, বাড্ডা