নদীতে জাল ফেলে কিংবা বড়শি দিয়ে মাছ ধরে যেখানে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন সেখানে গভীর পানিতে ডুব দিয়েই মাছ ধরছেন এক ব্যক্তি। নদীর মধ্যে ডুব দিয়ে, অনেক ভিতরে গিয়ে হাত দিয়ে, এমন কি মুখ দিয়ে কামড়ে জ্যান্ত মাছ ধরতে পারেন তিনি।
ভারতের উত্তর প্রদেশের হামিরপুর জেলার মেরাপুর গ্রামে সুঘর নিষাদ নামের ওই ব্যক্তির এমন ক্ষমতা দেখে আশেপাশের গ্রামের লোকেরাও হতবাক হয়ে যান। এমন বিচিত্র উপায়ে মাছ ধরেই সুঘর জীবিকা নির্বাহ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। জানান গেছে, নদীতে জাল ফেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও যখন স্থানীয় জেলেরা মাছ ধরতে পারেন না তখনই তারা সুঘরকে খবর দেন। আর সুঘরও তাদের সাহায্য করতে গভীর পানিতে ডুব দেন। একবার ডুব দিয়ে পানির ভিতরে গিয়ে তিনি এক এক বারে তিনটি করে মাছ ধরতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দুই হাত আর মুখে করে মাছ নিয়ে উঠে আসেন তিনি।
সুঘর জানান, তার বাবা শিবপ্রসাদের কাছ থেকে মাছ ধরার এমন কৌশল রপ্ত করেছেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই যখন তার বাবা নদীতে মাছ ধরতে যেতেন তার সঙ্গে যেতেন সুঘর । তার বাবা হাত দিয়ে মাছ ধরতেন। বাবার মাছ ধরার সেই অদ্ভুত কৌশল খুব মন দিয়ে শিখতেন তিনি।
সুঘর জানিয়েছেন, এমন পদ্ধতিতে মাছ ধরতে গভীর মনোযোগ প্রয়োজন। মাছ ধরার সময় পানির ভিতর অনেকক্ষণ শ্বাস আটকে মাছের পিছন পিছন যেতে হয়। তারপর মাছ নিজেই তার কাছে চলে আসে। সুঘরের ভাষায়, এমন কৌশলে মাছ ধরার জন্য মাছের মতোই পানির ভিতর চলতে হয়। সুঘর বলেন, মাছের পাশাপাশি চলতে চলতে যদি মাছের ওপর হাত রাখা যায় তাহলে মাছ আর এগোয় না। তারপরই তিনি সেটাকে ধরে ফেলেন। দীর্ঘদিন ধরে এ পদ্ধতিতে মাছ ধরলেও এখন পর্যন্ত কোনো মাছ সুঘরকে আঘাত করেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।
সুঘর জানান, গোসলের সময় হাত আর মুখ দিয়ে মাছ ধরেন তিনি। আবার যখন কেউ নিজের পছন্দের মাছের তালিকা তাকে ধরিয়ে দেন তখন তিনি নদীর ভিতরে ঢুকে নিয়ে সেই মাছ ধরার চেষ্টা করেন। এভাবেই দিনে অন্তত ১০ থেকে ১৫ কেজি মাছ ধরেন তিনি। সেটা বিক্রি করেই তার পরিবারের খরচ চলে। জানা গেছে, মাছ ধরার এমন অদ্ভুত কৌশলের কারণে নদীতে কেউ ডুবে গেলে স্থানীয় প্রশাসণ থেকে তাকেই খবর দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত অনেককেই পানিতে ডোবার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন সুঘর। সূত্র : এনডিটিভি