রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারকে অযৌক্তিক মিথ্যাচার বন্ধ করতে বলেছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মুখপাত্রের বক্তব্যের প্রতিবাদে গতকাল রোববার প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ এ দাবি করেছে। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মুখপাত্রের বক্তব্যের ৯ দিন পর বাংলাদেশ প্রতিবাদ জানাল। গত ১৫ নভেম্বর নেপিডতে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের অসহযোগিতার কারণে প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে না।
মিয়ানমারের ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মূলত ওই সব অযৌক্তিক ও মিথ্যা দাবি করে রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরির যে দায়িত্ব মিয়ানমারের রয়েছে, সেটি তারা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। মিয়ানমারের বিভিন্ন সরকারের আমলে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী জনগোষ্ঠীকে ন্যায্য অধিকার থেকে অব্যাহতভাবে বঞ্চিত করা আর নিষ্ঠুর নির্যাতনের কারণে যে রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। সমস্যাটা মিয়ানমার তৈরি করেছে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারকেই করতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা দীর্ঘায়িত হওয়ার জন্য মিয়ানমারই দায়ী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে বিলম্বিত করার কোনো ইচ্ছা বাংলাদেশের নেই। প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তির আলোকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশের আন্তরিকতার বিষয়টি কাজের মধ্য দিয়ে প্রশ্নাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। গত আগস্টে মিয়ানমার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছে রোহিঙ্গারা নিজেদের পূর্ব পুরুষের ভিটে মাটিতে ফিরে যাওয়ার জোরালো ইচ্ছার কথা জানায়। এ সময় রোহিঙ্গারা স্পষ্ট করেই বলেছে, রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ ও টেকসইভাবে বসবাসের মতো পরিস্থিতি পেলেই তারা ফিরে যাবে। রাখাইনের অনিশ্চিত পরিবেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে মিয়ানমারের অবশ্যই সহযোগিতা চাওয়ার সুযোগ নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার দাবি করছে, কতিপয় রোহিঙ্গা ফেরত গেছে। কিন্তু এটি প্রমাণ করে না যে, এর ফলে সেখানকার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়েছে। মিয়ানমার আরও দাবি করছে, সেখানকার পরিস্থিতি নাকি উন্নত হয়েছে। এটি যদি সত্য হয়ে থাকে—তবে জাতিসংঘ,গণমাধ্যম এবং রোহিঙ্গা নেতাদের রাখাইন ঘুরে দেখার সুযোগ দেওয়া হোক। এতে করে তারা সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের জানাবেন। আর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে রোহিঙ্গারা যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।