ভারতে আরো এক দলিত যুবককে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার ঘটনা সামনে এলো। এ বার ঘটনাস্থল উত্তরপ্রদেশের হরদোই জেলা। অভিযোগ, ২২ বছর বয়সী যুবক মনু কুমারকে এক উচ্চবর্ণের তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িত থাকার ‘অপরাধে’ রোববার পুড়িয়ে মেরেছে ওই তরুণীর পরিবার। শুধু মনুই নয়, এই ঘটনার আকস্মিকতায় মৃত্যু হয়েছে মনু কুমারের মা রামবেতি দেবীরও।
পুলিশ সূত্রে খবর, মনুর মা লখনউয়ের একটি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন গত শুক্রবার থেকেই। রোববার বিকেলে তাকে দেখেই ফিরছিলেন ওই দলিত যুবক। গ্রামে ঢোকার মুখেই তাকে ঘিরে ফেলে তরুণীর পরিবার। তার পকেটে সেই সময়ে মায়ের চিকিৎসা বাবদ ২৫ হাজার রুপি ছিল। সেই টাকা ছিনিয়ে নিয়ে শুরু হয় বেদম মার।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী নাথুলাল পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘‘মনুকে প্রথমে বেধড়ক মারা হয়, তারপরে গুপ্ত পরিবারের মাথা রাধে গুপ্ত তাকে টানতে টানতে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যান। সেখানেই তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় লোকেরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’’
ঘটনার খবর পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হয় মনুর মায়েরও। এই দলিত যুবকের কাকা রাজু কুমারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রাধে গুপ্ত, ডলি গুপ্ত, সত্যম সিংহ, শিখর সিংহ নামে চারজনকে আটক করেছে। গুপ্ত পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, বছর খানেক আগে মনুর সঙ্গে এই পরিবারের মেয়ে একবার পালিয়ে গিয়েছিল। মেয়েটির পারিবারিক হস্তক্ষেপেই তারা বাড়ি ফিরে আসে। মনুর পরিবার থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়, এই তরুণীর সঙ্গে মনু ভবিষ্যতে কখনো দেখা করবে না। কিন্তু মনু সেই কথা রাখেনি বলেই গুপ্ত পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়া হবে।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয় এদিন। রণদীপ সুরজওয়ালা টুইটরে লেখেন, ‘বিজেপির রাজত্বে উত্তরপ্রদেশে কেউ সুরক্ষিত নয়। মহিলা, দলিত সমাজের মানুষ, সবাই আক্রান্ত।’ সুরজওয়ালার দাবি, অভিযুক্ত পরিবারটি ক্ষমতাশালী তাই প্রশাসন গোটা ঘটনা জেনেও নীরব।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা