স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নতুন কোচ হিসেবে নিয়োগ পেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাসেল ডোমিঙ্গো। আগামী দুই বছরের জন্য ডোমিঙ্গোকে জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আজ মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে রবার্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কোচ হিসেবে ডমিঙ্গোর নাম ঘোষণা করেন। আগামী ২১ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিবেন ডোমিঙ্গো।
দ্বাদশ বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার পর প্রধান কোচ স্টিভ রোডসকে সরিয়ে দেয়ায় তার স্থলাভিষিক্ত হলেন ডোমিঙ্গো। তিনি ছিাড়াও প্রধান কোচ হওয়ার দৌঁড়ে ছিলেন মাইক হেসন ও মিকি আর্থার। শেষ পর্যন্ত হেসন ও আর্থারকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের দায়িত্ব পেলেন ডোমিঙ্গো।
গত ৭ আগস্ট ঢাকায় এসে প্রধান কোচের জন্য সাক্ষাৎকার দিয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কোচ ডোমিঙ্গো। এই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। ডোমিঙ্গোর ভবিষ্যত পরিকল্পনা পছন্দ হয় বিসিবি’র।
বিসিবি’র সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘তার অভিজ্ঞতা অনেক। আমরা তার কোচিং পরিকল্পনায় সন্তুষ্ট। দলকে এগিয়ে নিতে কি করতে হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন তিনি।’
ডোমিঙ্গো বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়াটা অনেক বড় সম্মানের। আমি বাংলাদেশের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী ছিলাম এবং বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। বর্তমান খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি এবং উদীয়মান খেলোয়াড় বের করে আনাই আমার প্রধান লক্ষ্য।’
কোচ হিসেবে নিজের সাক্ষাৎকারে ডোমিঙ্গো নিজের পরিকল্পনা দু’ভাবে বিসিবি’র সামনে তুলে ধরেন। একটি ২০২০ টি-২০ বিশ্বকাপ, আরেকটি ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এছাড়া আরও অনেক পরিকল্পনাও তুলে ধরেন তিনি। তার পরিকল্পনায় সন্তুষ্ট হয়ে জাতীয় দলের দায়িত্ব ডোমিঙ্গোকে দেয়ার সিদ্বান্ত নেয় বিসিবি। বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে ডোমিঙ্গোর প্রথম এসাইনমেন্ট হবে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক টেস্টের সিরিজ।
অল্প বয়সে কোচিং পেশায় প্রবেশ করার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন প্রভিন্সের হয়ে জুনিয়র ক্রিকেট খেলেছেন ডোমিঙ্গো। কোচিংয়ে ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে ডোমিঙ্গোর। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০০৪ আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মাত্র ২৫ বছর বয়সেই দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন প্রভিন্স যুব দলের কোচের দায়িত্ব পেয়ে যান তিনি। পরের ১২ বছরে দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৯, ‘এ’-‘বি’ দলের দায়িত্ব পালন করেন ডোমিঙ্গো। ২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া দল ওয়ারিয়র্সের কোচের দায়িত্বও পান তিনি।
২০১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হন ভারতকে ঐ বছর বিশ্বকাপ এনে দেয়া গ্যারি কার্স্টেন। নিজের পছন্দ মত ডোমিঙ্গোকে সহকারী হিসেবে বেছে নেন কার্স্টেন। এক বছর পরই টি-২০ দলের প্রধান কোচ হন ডোমিঙ্গো।
তবে ২০১৩ সালে কার্স্টেনের বিদায়ে তিন ফরম্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচ হন ডোমিঙ্গো। এরপর ১৩ টেস্ট সিরিজে ৮টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয় এনে দেন ডোমিঙ্গো। ওয়ানডেতেও সাফল্য ছিলো চোখে পড়ার মত। ২২ ওয়ানডে সিরিজের ১৪টিতে জয় পায় প্রোটিয়ারা। এছাড়া তার অধীনে ৪২টি টি-২০ ম্যাচে ২৩ টিতে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।