সাইফুল ইসলাম সুমন: আগামী ২৯ জুলাই ‘সোমবার’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বিশ্ব বাঘ দিবস’। গত বছর বাঘ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল -‘বাঘ বাঁচাই, বাঁচাই বন, রক্ষা করি সুন্দরবন’। সর্বশেষ শুমারি অনুসারে, বিশ্বের মধ্যে বাঘ সংরক্ষণে ভারত বর্তমানে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। বাংলাদেশে বাঘ বলতে আমরা প্রধানত সুন্দরবনের ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’কেই বুঝি। দিবসটি উপলক্ষে বন বিভাগ সুখবর দিয়েছে। বন বিভাগ জানিয়েছে, যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘ রক্ষায় বেশি মনোযোগী সরকার। যার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপে সুন্দরবনে দস্যুতা এবং চোরা শিকারিদের তৎপরতা কমেছে। সেই সঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। এসব কারণে সুন্দরবনে আগের তুলনায় বাঘ অনেকটা সুরক্ষিত এবং বাঘের বিচরণক্ষেত্রও নিরাপদ হওয়ার ফলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবন সংলগ্ন জেলার মানুষকে সচেতন ও বাঘ রক্ষায় সম্পৃক্ত করতে দুই বছর ধরে ঢাকার বাইরে জাতীয়ভাবে পালন করা হচ্ছে ‘বাঘ দিবস’।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সুন্দরবনে তৃতীয় দফায় ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে বাঘ গণনা বা পরিবীক্ষণ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি। সুন্দরবনের খুলনা ও শরণখোলা রেঞ্জের দুটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ৪৭৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় করা হয় এই মনিটরিং। ২৩৯টি পয়েন্টে গাছ বা খুঁটির সঙ্গে ৬৭০টি ক্যামেরা বসিয়ে এ বাঘ মনিটরিং করা হয়। এর আগে প্রথম দফায় ২০১৩ সালে সুন্দরবনের ২৬ শতাংশ এলাকায় ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতিতে বাঘ শুমারি হয়েছিল। ওইসময় বাঘের উপস্থিতি বেশি এমন এলাকা বেছে নেওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের কাজ করা হয়। ২০১৫ সালের মার্চে প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। এর আগে ২০০৪ সালের এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ৪৪০টি। এর মধ্যে পুরুষ ১২১টি, স্ত্রী ২৯৮টি এবং বাচ্চা রয়েছে ২১টি। তবে সর্বশেষ সুন্দবনের বাঘের সংখ্যা, অবস্থান ও গতিপ্রকৃতি জানতে আবারও মনিটরিং কার্যক্রম শুরু করে বন বিভাগ।
সূত্র জানায়, ২০১০ সালে জানুয়ারি মাসে থাইল্যান্ডের হুয়ানে অনুষ্ঠিত হয় টাইগার রেঞ্জ দেশগুলোর ‘এশিয়া মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স’। এখান থেকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, প্রতিবছর ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হবে। ওই সাল থেকে এ দিবসটি পালিত হয়। সম্মেলনে বাঘ সংরক্ষণে ৯ দফা পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করা।