সালাহউদ্দীন আহমাদ: ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশে) এক সের মোটা চালের দাম ছিল বারো আনা বা ৩০ টাকা মণ। আর চিকন চালের দাম ছিল ১ টাকা সের বা ৪০ টাকা মণ। তখন এক মণ ধানের দাম ছিল গড়ে ১৮/১৯ টাকা (মোটা) এবং ২৮/২৯ টাকা (চিকন)। ওই সময়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ছিলো ১৫০ টাকা। সেই হিসেবে এক ভরি সোনার দামে বাজারে ৫ মণ মোটা চাল বা প্রায় ৪ মণ চিকন চাল পাওয়া যেতো। আর সোনা হচ্ছে সারা দুনিয়ায় সবকালে অর্থমূল্যের স্ট্যাÐার্ড। বাংলাদেশের আজকের বাজারে যখন এক ভরি সোনার দাম কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা, তখন ১৯৭১ সালের হার অনুযায়ী এক মণ মোটা চালের দাম হবার কথা সর্বনি¤œ ১০ হাজার টাকা। কিন্তু বাস্তবে বাজারে এক মণ (৪০ কেজি) মোটা চালের দাম মাত্র ১ হাজার ৬শ’ টাকা। আর ধানের দাম যদি হিসাব করা হয়, তাহলে ১৯৭১ সালে যেখানে এক ভরি সোনার দামে ৮ মণ মোটা ধান মিলতো, সেই হিসেবে আজ এক মণ ধানের দাম হবার কথা সর্বনি¤œ ৬ হাজার ১৫০ টাকা। আমরা ৬ হাজার টাকা ধরলেও কৃষক প্রতিমণ মোটা ধানে ঠকে যাচ্ছে অন্তত সাড়ে ৫ হাজার টাকা। আর চালের ক্ষেত্রে ঠকে যাচ্ছে অন্তত ৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ এই পরিমাণ টাকা বাংলাদেশের কৃষক প্রতিবছর প্রতিমণ ধান বা চালে নিজ পকেট থেকে জাতিকে ভর্তুকি দিতে দিতে নিঃস্ব হচ্ছে। অথচ সরকার দাবী করে সে নাকি কৃষিতে ভর্তুকি দেয়। বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটে সরকার বছরে নয় হাজার কোটি টাকা কৃষিভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখলেও বাস্তবে খরচ করে সর্বোচ্চ ছয় হাজার কোটি টাকা। যদিও এই অর্থ কৃষক সরাসরি পায় না। এটা দেয়া হয় মূলত রাসায়নিক সারের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আমদানীর পেছনে। এখানেও অনেক নয়ছয় বা দুর্নীতি আছে। আমরা একে সরকারের সৎ বন্টন হিসেবে মেনে নিয়ে ৬ হাজার কোটি টাকার কৃষিভর্তুকির পুরোটা ধানের (বছরে ধানের উৎপাদন ৪ কোটি ৭৫ লাখ টন) ক্ষেত্রে ধরে নিলেও দেখতে পাবো, এক টন ধানে সরকারের ভর্তুকি দাঁড়ায় ১ হাজার ২৬৫ টাকার কাছাকাছি। অর্থাৎ মণপ্রতি এক টাকা চার আনার মতো। অথচ এক মণ ধানে কৃষকই নিজ থেকে ভর্তুকি দিচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। সেই হিসেবে শুধু ধানের ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের কৃষক বছরে ভর্তুকি দেয় ২৫ লাখ কোটি টাকারও বেশি।যা তার কৃষি-জিডিপি’র প্রায় ৫ গুণ। আর এটাই হচ্ছে স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছরে বাংলাদেশের কৃষকের প্রকৃত প্রাপ্তি। এবং এজন্যই বাংলাদেশের কৃষক এতো দরিদ্র। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশ বা ভারতবর্ষ ছাড়া বিশ্বের আরো কেন দেশের কৃষক এতো দরিদ্র নয়।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, ১৯৭১ সালের সোনার দর আর ধান-চালের দরের তুলনামূলক হিসেবে আজকের বাজারে যদি এক কেজি মোটা চালের দাম আড়াইশ’ টাকা দাঁড়ায় তাহলে বাস্তব পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে? বাংলাদেশের মানুষের কি এই দামে চাল কিনে খাওয়ার সক্ষমতা আছে? তার আগে বলে নেই, বাংলাদেশের জাতীয় মাছের নাম ‘ইলিশ’। ‘মাছে-ভাতে বাঙালী’র জাতীয় জীবনের ইতিহাসের খোঁজ নিলে দেখা যাবে, ১৯৭১ সালেও ১ কেজি ওজনের একটি ইলিশ মাছের দাম ছিল চার আনা। অর্থাৎ টাকায় তখন প্রতিটি ১ কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ মাছ পাওয়া যেতো। সেই এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ আজকের বাজারে মানুষ সর্বনি¤œ এক হাজার টাকায় কিনে খাচ্ছে। তাহলে মাছের মূল্যস্ফীতি, চালের তুলনায় আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়ালো? ৪ হাজার গুণ। ১৯৭১ সালে এক সের (কেজি) ঘীয়ের দাম ছিল ৮ থেকে ১০ টাকা। সেটা এখন ১২শ’ থেকে ১৪শ’টাকা। এখানে তো কেউ বড় আপত্তি তোলেননি। অথচ বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে চালের বিপরীতে মাছ-দুধের গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়।কারণ পুষ্টির উৎস এখানেই। চালে নয়। তাই বাংলাদেশে এখন সরকার খাদ্য তথা চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দাবী করলেও পুষ্টির ক্ষেত্রে অতীতের তুলনায় অনেক অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এবার চালের মূল্য বিশ্লেষণ করা যাক। বাংলাদেশে বর্তমানে সাড়ে ৩ কোটির মতো পরিবার রয়েছে। চালের দাম যদি আড়াইশ’ টাকা কেজি হয়, তাহলে এর মধ্যে অন্তত ৫০ লাখ পরিবারের কোনো সমস্যা হবে না। চালের দাম দেড়শ’ টাকা কেজিতে নেমে এলে অন্তত ১ কোটি পরিবারের তেমন কোনো সমস্যা হবে না। আর একশ’ টাকায় নামলে দেড় কোটি পরিবার অর্থাৎ আগের এক কোটির সাথে আরো ৫০ লাখ পরিবার টেনেটুনে চলতে পারবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাকী ২ কোটি পরিবারকে নিয়ে। এদের পক্ষে ১০ টাকা কেজি দরে চাল কিনে খাওয়াও কঠিন। কিন্তু জনগণ বা ভোক্তাকে সস্তায় খাওয়ানোর দায় উৎপাদক বা কৃষকের নয়। এটা সরকারের দায়িত্ব। এজন্য সরকারকে ভিন্ন ব্যবস্থা নিতে হবে। অথচ বাংলাদেশের সরকার এই দায় নিজের কাঁধ থেকে সুকৌশলে দরিদ্র কৃষকের কাঁধে চাপিয়ে রেখেছে। আর এজন্যই বাংলাদেশের কৃষক ঐতিহাসিকভাবে দরিদ্র। যার দায়ও পুরোপুরিই সরকারের।
অন্যদিকে, প্রযুক্তির বর্তমান বাস্তবতায় ধানের দাম চালের দামের চেয়ে বেশী হবার কথা। কারণ চাল হচ্ছে ধানের একটি উপজাত মাত্র। এমন উপজাত ধানের আরো রয়েছে। যেমন ধান থেকে চাল করার পর ধানের কুড়া থেকে ভোজ্য তেল (রাইস ব্রায়ান অয়েল) তৈরি করা হচ্ছে। এটা চালের চেয়ে আরো দামী। বাংলাদেশে উৎপাদিত সাড়ে ৪ কোটি টন ধান থেকে চাল তৈরির পর যে কুড়া হয়, তা দিয়ে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্যতেল উৎপাদন সম্ভব। এটা দেশে এখন শুরুও হয়ে গেছে। এক টন তেলের দাম ১ লাখ টাকা হিসেবে ২০ লাখ টন তেলের দাম ২০ হাজার কোটি টাকা। আবার ধানের তুষ থেকে জ্বালানী ও পশুখাদ্য তৈরী হচ্ছে। সেই হিসেবে চালের দামের চেয়ে ধানের দাম বেশীই হয়। চালকল মালিকরা এ থেকে ঠিকই লাভবান হচ্ছে। কিন্তু সরকার বিষয়টি এখনো আমলে নেয়নি।
সব সরকারই ধান-চালের দাম রাজনৈতিক কারণে নানা অপকৌশলে বেঁটে করে রেখেছে। অন্য পণ্যমূল্য স্বাধীনভাবে বৈধ-অবৈধ পথে বেড়ে উঠতে পারলেও চালের ক্ষেত্রে তেমনটি হয়নি। চালের নৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক মূল্য কখনো বাংলাদেশে প্রকাশ করা হয়নি। এটা না করেছে সরকার, না করেছে অর্থনীতিবিদ, না কৃষিবিদরা। কারণ তারা সবাই চালের নি¤œমূল্যের বেনিফিসিয়ারী গোষ্ঠী। চাল নিয়ে শুধু রাজনীতিই হচ্ছে এবং তার পরিণতিতে দরিদ্র কৃষক আরো দরিদ্র হচ্ছে। চালসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের যৌক্তিক ও নৈতিক মূল্য নির্ধারণে বহুকাল ধরে বাংলাদেশে ‘কৃষি মূল্য কমিশন’ গঠনের দাবী থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এবার আসা যাক চালের অর্থনীতির পরবর্তী হিসেবে। যেখানে দেখা যাবে ধান-চালের অস্বাভাবিক নি¤œ মূল্য বাংলাদেশের কি কি ক্ষতি করেছে এবং করছে। ধান-চালের দাম বাংলাদেশের গত ৫০ বছরের মূল্যস্ফীতির তুলনায় অনেক কম বলে ভাত খাবার পরিমাণ এদেশে অনেক বেশী। বাংলাদেশে প্রতিদিন মাথাপিছু চাল ব্যবহারের পরিমাণ সরকারীভাবে ধরা হয় ৪শ’ ৫০ গ্রাম। যদিও প্রকৃত হিসেবে তা আরো বেশী এবং সরকারী হিসেবেই এশিয়ার তথা বিশ্বেরও সবচে’ বড় ভেতো জাতি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ।এশিয়ার আরেক ভেতো জাতি জাপানে এই চাল ব্যবহারের পরিমাণ মাথাপিছু দৈনিক ১শ’ ৫০ গ্রামের মতো। তার মানে বাংলাদেশীরা জাপানীদের তুলনায় তিনগুণ বেশী ভাত খায়। জাপানের মানুষের গড় আয়ু ৮৫ বছর এবং বাংলাদেশে ৭১ বছর। জাপানের মানুষের অসুস্থতার পরিমাণ ও চিকিৎসা ব্যয়ও বাংলাদেশের তুলনায় যথেষ্ট কম। জাপানে এক কেজি চালের দাম সর্বনি¤œ ৩ ডলার বা আড়াইশ’ টাকার মতো। বাংলাদেশে এটা আধা ডলার। বাংলাদেশে চালের বা ধানের দাম বাড়লে এর ভোগ অনেক কমে যেতো। ফলে চালের দাম এখানে তিনগুণও যদি বাড়ে এবং কৃষক সেই হারে ন্যায্যমূল্য পায় তাহলে একদিকে অল্প জমিতে বেশি ধান উৎপাদন সম্ভব হতো, অন্যদিকে ভোক্তা পর্যায়ে চালের ব্যবহার অনেক কমে গিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে চলে আসায় চালের পেছনে ভোক্তার ব্যয় খুব একটা বাড়তো না। আবার ধানের দাম বাড়লে দেড় কোটি দরিদ্র কৃষক পরিবারের আয় বেড়ে তাদের দারিদ্র্য পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হতো। এমনকি কৃষি-শ্রমিকদেরও আয় এর পরিণামে বেড়ে যাবে। জাপানের হিসেবে বাংলাদেশে চালের ব্যবহার অন্তত ৫০ শতাংশ কমানোর সুযোগ রয়েছে। ১৯৭১ সালে সাড়ে ৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে চালের উৎপাদন ছিল প্রায় ১ কোটি টন। তখন ঘাটতি ছিল ২৫ লাখ টনের মতো। প্রায় ৫০ বছর পরে ১৬ কোটি মানুষের (১ কোটি প্রবাসে) সেই বাংলাদেশে চালের উৎপাদন এখন সরকারী হিসেবে সাড়ে ৩ কোটি টন (ধান আকারে ৪ কোটি ৭৫ লাখ টন)। বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি হেক্টর কৃষিজমির ৮৫ শতাংশই রয়েছে ধানচাষে। সরকার একমাত্র খাদ্যের নামে ‘চাল’ উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে বাংলাদেশের কৃষির এই অপূরণীয় ক্ষতি করেছে এবং কৃষিকে এভাবে ভারসাম্যহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। কৃষক কম মূল্য প্রাপ্তির কারণে ধানের উৎপাদন বাংলাদেশে উল্লাম্বিকভাবে (ভার্টিক্যালি) না বেড়ে আনুভূমিকভাবে (হরাইজেন্টালি) বেড়েছে। ভিয়েতনামে যেখানে হেক্টরপ্রতি মোটা ধানের উৎপাদন সাড়ে ৭ থেকে ৮ টন, সেখানে বাংলাদেশে তা ৪ থেকে সাড়ে ৪ টনের বেশী নয়। ধানের দাম কৃষক বর্তমানের ৩ গুণ বেশি পেলে জমি না বাড়িয়েই উৎপাদন তারা ২/৩ বছরের মধ্যেই ভিয়েতনামের সমান করে ফেলার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশ কৃষক কখনোই সে পথে হাঁটবে না। কারণ বাংলাদেশে বাম্পার ফলন মানেই কৃষকের বাম্পার লোকসান। বর্তমান আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির দুনিয়ায় সাড়ে ৪ কোটি বা ৫ কোটি টন ধান উৎপাদনের জন্য কখনোই ৫০ লাখ হেক্টরের বেশী জমি বরাদ্দের প্রয়োজন নেই। অথচ বাংলাদেশের বরাদ্দ ৮৫ লাখ হেক্টর। যা এক বিপুল অপচয়। আবার বর্তমান বাস্তবতায় বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের খাবারের জন্য সর্বোচ্চ দেড় কোটি টনেরও বেশি চাল উৎপাদনের প্রয়োজন নেই। সুতরাং দু’দিক দিয়েই বাংলাদেশ একটি চরম লজ্জাজনক অবস্থানে রয়েছে। আর এটা হয়েছে মূলত কম দামের কারণে। যদিও সরকার এই ব্যর্থতাকে অবলীলায় ‘গৌরব’ হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছে এবং একশ্রেণীর নির্বোধেরা তা মেনেও নিচ্ছে। সরকার রাজনৈতিক চাতুরীতে একমাত্র ধান বা চালকেই বাংলাদেশে ‘খাদ্য’ হিসেবে বিবেচনা করতে গিয়ে কৃষির এবং জনগণের পুষ্টি পরিস্থিতিরও অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে এনেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ধান হচ্ছে চরম পানিখেকো এবং পরিবেশ-বিরোধী ফসল। এক কেজি ধান ফলাতে বাংলাদেশে গড়ে ৩ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন হয়। পানির অর্থনৈতিক মূল্য যোগ করলে এক কেজি ধানের উৎপাদন-মূল্য পাঁচশ’ টাকা ছাড়িয়ে যাবার কথা। বোরো (শীতকালীন) মৌসুম কখনোই ধানের মৌসুম নয়। ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশে আমন (বর্ষা) মৌসুম হচ্ছে ধানের প্রকৃত মৌসুম। অথচ বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে বোরো মৌসুমকেই ধানের প্রধান মৌসুম বানিয়ে ফেলা হয়েছে। সাড়ে ৩ কোটি টন চালের আড়াই কোটি টনই আসছে এখন বোরো থেকে। আর এজন্য বাংলাদেশের কৃষি বর্তমানে তার সেচের পানির জন্য ৮০ ভাগই ভূগর্ভের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যা কৃষির জন্য মহাপাপ। এই পাপের ফসল দিয়েই এখন বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রাখা হচ্ছে। যার মাশুল দিতে হবে ভবিষ্যত বংশধরদের। কৃষিকে এভাবে অস্বাভাবিক ভূতলে নিয়ে যাবার কারণেই বাংলাদেশ আজ আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে বলে পরিবেশবিদরা মনে করেন। অপরদিকে বাংলাদেশে ব্যাপক আকারে ডায়াবেটিস রোগ ছড়ানোরও অন্যতম উৎস চাল। আবার চিকিৎসকদের মতে, মাত্রাতিরিক্ত চাল বা ভাত খাবার কারণে বাংলাদেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। অন্যদিকে, তেল ও ডাল জাতীয় ফসল হচ্ছে বাংলাদেশের পুষ্টির অন্যতম উৎস। ৩০/৩৫ বছর আগেও কখনো বাংলাদেশকে ভোজ্যতেল কিংবা ডাল আমদানী করতে হয়নি। এখন ডাল ও তেলের ৮০ ভাগই আমদানী নির্ভর হয়ে ওঠায় বাংলাদেশকে এখাতে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে। কারণ অত্যধিক ধান উৎপাদনের জন্য বোরো মৌসুমকেও বরাদ্দ করায় তেল ও ডাল জাতীয় ফসল উৎপাদনের জমি পাওয়া যাচ্ছে না। আমিশ বা পুষ্টির আরেক প্রধান খাত- দুধ, ডিম, মাছ, মাংশ।