অবিশ্বাস্য। অকল্পনীয়!!
চলছে হরিলুট, দেখার নেই কেউ!!
লুটের এমন ঘটনা দুনিয়ার ইতিহাসে আগে কখনো ঘটেছে কি-না কে জানে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ঘটেছে অকল্পনীয় এ ঘটনা। প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের থাকার জন্য নির্মিত ভবনে আসবাবপত্র কেনা আর তা ফ্ল্যাটে ওঠানোর খরচ দেখে তাজ্জব সবাই। সমালোচনার ঝড় হইছে চতুর্দিকে। কেউ কেউ কৌতুক করে বিসিএসের পড়াশুনা বাদ দিয়ে বালিশ তোলার কাজ খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন।
#দাম_আর_ওঠানোর_খরচে_বিশ্ব_রেকর্ড
ফ্ল্যাটের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনতে আর ফ্ল্যাটে তা তুলতে কেমন খরচ পড়েছে তা একবার চোখ বুলিয়ে দেখা যাক।
• প্রতিটি বালিশ কেনায় খরচ পড়েছে ৫৯৫৭ টাকা আর প্রতিটি বালিশ ফ্ল্যাটে ওঠাতে খরচ হয়েছে ৭৬০ টাকা।
• প্রতিটি বিছানা কেনায় ব্যয় দেখানো হয়েছে ৫৯৮৬ টাকা আর ওঠানোর ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯৩১ টাকা।
• চাদর ও বালিশ কেনা হয়েছে ৩৩০টি। খাট প্রতি কেনায় খরচ হয়েছে ৪৩৩৫৭ টাকা আর ওঠানোর ব্যয় ১০৭৭৩ টাকা। খাট কেনা হয়েছে ১১০টি।
• একটি বৈদ্যুতিক চুলা কেনার খরচ পড়েছে ৭৭৪৭ টাকা আর ওই চুলা ওঠাতে ব্যয় হয়েছে ৬৬৫০ টাকা।
• প্রতিটি বৈদ্যুতিক কেটলি কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫৩১৩ টাকা আর ওঠানোর খরচ ২৯৪৫ টাকা।
• রুম পরিষ্কারের একটি মেশিন কিনতে সংশ্লিষ্টরা খরচ দেখিয়েছে ১২০১৮ টাকা আর ওঠাতে খরচ দেখিয়েছে ৬৬৫০ টাকা।
• প্রতিটি ইলেক্ট্রিক আয়রন কিনতে খরচ পড়েছে ৪১৫৪ টাকা আর ওঠানোর খরচ ২৯৪৫ টাকা।
• টেলিভিশন প্রতিটির দাম ৮৬৯৬০ টাকা আর ওঠানোর খরচ ৭৬৩৮ টাকা। টেলিভিশন কেনা হয়েছে ১১০টি। সেগুলো রাখার জন্য আবার কেবিনেট করা হয়েছে ৫২ হাজার ৩৭৮ টাকা করে।
• ফ্রিজের দাম দেখানো হয়েছে প্রতিটি ৯৪২৫০ টাকা। আর ওঠাতে খরচ পড়েছে ১২৫২১ টাকা।
• ওয়ারড্রোব প্রতিটি কেনায় খরচ দেখানো হয়েছে ৫৯৮৫৮ টাকা। ওঠাতে খরচ পড়েছে ১৭৪৯৯ টাকা।
• মাইক্রোয়েভ প্রতিটি কেনায় ব্যয় ৩৮২৭৪ টাকা। উঠাতে খরচ হয়েছে ৬৮৪০ টাকা।
• প্রতিটি সোফা কেনা হয়েছে ৭৪ হাজার ৫০৯ টাকায়, ভবনে ওঠাতে খরচ হয়েছে ২৪ হাজার ২৪৪ টাকা করে।
• ১৪ হাজার ৫৬১ টাকা করে কেনা সেন্টার টেবিলের প্রত্যেকটি ভবনে তুলতে লেগেছে ২ হাজার ৪৮৯ টাকা।
• ছয়টি চেয়ারসহ ডাইনিং টেবিলের প্রতিটি সেট কেনা হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ৬৭৪ টাকায়। ভবনে তুলতে লেগেছে ২১ হাজার ৩৭৫ টাকা করে।
#জড়িত_কারা ??
সরকারি টাকার এই রেকর্ড লুটপাটে নাম এসেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের পাবনা পূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের আওতায় মূল প্রকল্প এলাকার বাইরে হচ্ছে গ্রিনসিটি আবাসন পল্লী। ওই পল্লীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য ২০ তলা ১১টি ও ১৬ তলা আটটি ভবন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০ তলা আটটি ও ১৬ তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া নয়টি ভবনের ৯৬৬টি ফ্ল্যাটের জন্য আসবাবপত্র কেনা শেষ হয়েছে। এর মধ্যে একটি ২০ তলা ভবনের ১১০টি ফ্ল্যাটের আসবাবপত্র কেনা ও তা ভবনে ওঠাতে সব মিলে ব্যয় হয়েছে ২৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ২৯২ টাকা। প্রকল্পের নথি বিশ্লেষণে পাওয়া গেছে দাম আর ওঠানোর ওই রেকর্ড। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, নিয়ম মেনেই কেনাকাটা করা হয়েছে।