ডেস্ক রিপোর্ট: সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে ইতিহাসে গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ছিল একটি কলঙ্কজনক প্রহসনের নির্বাচন। নজিরবিহীন সন্ত্রাস, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সর্বপরি নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে ভোটের দিনের আগের রাতেই ভোটের ফলাফল একতরফা ভাবেই তাদের পক্ষে সাজিয়েছে সরকার। আমরা সংগত কারণেই ভোটাধিকার বঞ্ছিত জনগণের ক্ষোভের ধারাবাহিকতায় এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিলাম এবং জাতীয় সংসদে আমাদের মনোনীত বিজয়ী প্রার্থীদের শপথ গ্রহণ না করার জন্য আহ্বান করেছিলাম।
তিনি বলেন, বিএনপি একটি উদারপন্থী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচনই ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র পথ। দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে জনগণের সংসদ নির্বাচন করাই এই সংকট সমাধান করার একমাত্র পথ। তাই একদিকে নতুন নির্বাচনের দাবি ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের অব্যাহত দাবি অন্যদিকে দেশের চলমান অর্থনৈতিক, আইন-শৃংখলা ও সামাজিক চরম সংকট যথাক্রমে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, শেয়ার বাজার কেলেংকারী, ব্যাংক লুট, নারী নির্যাতন, গুম-খুন, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ-এর বিরুদ্ধে একটি কার্যকরী ও জোরালো গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আমাদেরকে নতুনভাবে উদ্দীপ্ত হতে হবে।
তিনি বলেন, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে সংসদে কথা বলার সীমিত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংসদ ও রাজপথের সংগ্রামকে যুগপৎভাবে চালিয়ে যাওয়াকে আমরা যুক্তিযুক্ত মনে করছি। জাতীয় রাজনীতির এই সংকটময় জটিল প্রেক্ষিতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধারের সংগ্রামের অংশ হিসাবে আমাদের দল সংসদে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করি দেশবাসীকে সাথে নিয়ে আমাদের এই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় অবিলম্বে একটি অবাধ জাতীয় নির্বাচন আদায় করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রীসহ সকল রাজবন্দীকে মুক্ত করে আমরা আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত জাতীয় ঐক্যমতের বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, রোববার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেওয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক ধারার অংশ হিসেবে সীমিত সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের অংশ হিসেবে শপথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি থেকে নির্বাচিত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন শপথ নিলেও বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত মহাসচিব ফখরুল এখনও শপথ নেননি। দলের সিদ্ধান্ত হলে আপনি কখন শপথ নিচ্ছেন, তা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সময় মতোই আপনারা জানতে পারবেন।
Previous Postইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে যাওয়া ৫ পুলিশ বরখাস্ত
Next Postপর্যটককে বাঁচাতে গিয়ে মারা গেলেন বাবা ছেলে
Related articles
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত পরিবর্তন নেই স্টাফ রিপোর্টার (১০ মিনিট আগে) ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৬:১৪ অপরাহ্ন mzamin facebook sharing button twitter sharing button skype sharing button telegram sharing button messenger sharing button viber sharing button whatsapp sharing button প্রবল আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। এর মাধ্যমে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজন এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে নতুন আইনে শাস্তি কিছুটা কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। তাই শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এ আইনে রয়েই গেছে। বুধবার পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতি করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি, বরং তা আগের মতোই রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ও ২৮ ধারা দুটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে ধারা দুটি বাতিলের আহ্বান করা হয়েছিল। শাস্তি কমিয়ে এই দুটি বিধান রেখে দেয়ায় এর অপপ্রয়োগ ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের সুযোগ থেকেই যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটি কার্যকর হলে আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভারসহ সবকিছু জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত এক ধরনের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞাপন আইনের চারটি ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। সাইবার-সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ চায়, ডিজিটাল বা সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের শাস্তি হোক। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশির ভাগ ধারা সন্নিবেশিত থাকায় এই আইন কার্যকর হলে পূর্বের ন্যায় তা আবারও সাংবাদিক নির্যাতন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।
HimalaySep 20, 2023