হিমালয় ডেস্কঃ হ্যাম্পটন কোর্ট প্যালেস এক প্রাচীনতম এবং অবশ্যই ব্রিটেনের এক সবচেয়ে সুবিশাল প্রাসাদ। এই প্রাসাদটির একটি 500 বছরের প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে এবং এটি 60 একরের বিস্তৃত সুন্দর বাগানের মধ্যস্থলে নির্মিত। এই প্রাসাদ ব্রিটেনের পবিত্র রাজতন্ত্রের জীবন্ত সাক্ষ্য এবং বিশেষ করে অষ্টম হেনরির রাজত্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত।বলা বাহুল্য হ্যাম্পটন কোর্ট প্রাসাদ সমগ্র ব্রিটেনের এক প্রাচীনতম বিদ্যমান টিউডার রাজবংশীয় প্রাসাদ। অষ্টম হেনরি একজন অসাধারণ ব্যাক্তি ছিলেন এবং তার ছয় স্ত্রী ছিল যারা সবাই হ্যাম্পটন প্রাসাদে বাস করতেন। তাঁর প্রতিটি স্ত্রীকে সেরা রাজকীয় সুযোগ সুবিধা প্রদান করার জন্য অষ্টম হেনরি প্রাসাদ সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য £(পাউন্ড) 62,000 ব্যয় করেন। এই প্রাসাদ প্রাঙ্গন প্রাথমিকভাবে একটি কৃষি ক্ষেত্র ছিল যা পরবর্তীকালে একটি বিস্ময়কর প্রাসাদে রূপান্তরিত করা হয়।
রাজার কক্ষ গুলি বিশ্বের সবচেয়ে চমৎকার ব্যরোক শৈলীর কক্ষ ছিল, অন্যদিকে রানীদের কক্ষ গুলি তাদের রাজকীয় সাজসজ্জা এবং নিদারুণ অভ্যন্তরীণ নকশার জন্য বিখ্যাত। রাজকীয় কক্ষ গুলি ছাড়াও কার্ডিনাল ওয়েসলির ব্যক্তিগত কোয়ার্টারের একটি দর্শন অত্যন্ত ফলপ্রসূ অভিজ্ঞতা হতে পারে। হ্যাম্পটন প্রাসাদের বিখ্যাত টিউডার রান্নাঘর পরিদর্শন করতে ভুলবেন না। ষষ্টদশ শতকের এই রান্নাঘর শুধুমাত্র বিরাট নয় বরং রাজকীয় জীবনের প্রকৃত চেহারাকে প্রকাশ করে।
এই প্রাসাদের ভ্রমণটিকে স্মরণীয় করে তুলতে এই প্রাসাদের পোশাকধারী গাইড দের সহায়তা নিতে পারেন, যারা বিনামূল্যে প্রাসাদের সফর করায় এবং যেই ভাবে তারা এই প্রাসাদের জীবনযাত্রা এবং এখানে বসবাসকারী উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বদের ব্যখ্যা দেয় তা সত্যিই অতুলনীয়। গাইডসহ ভ্রমণ ছাড়াও টিকেট মূল্যের সাথে একটি বহুভাষী নির্দেশিকা প্রদান করা হয় যার কাছে এই প্রাসাদ সম্পর্কিত তথ্যের একটি ভান্ডার রয়েছে।
হ্যাম্পটন কোর্ট প্রাসাদের শিল্পকর্মের সংগ্রহ বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক চিত্র সংগ্রহালয় এবং রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সম্পত্তি।ষষ্ঠদশ, সপ্তদশ এবং অষ্টাদশ শতকের বিখ্যাত সেরা শিল্পকর্মগুলি যত্নসহকারে প্রাসাদের ভিতরে সংরক্ষিত করে রাখা আছে। হ্যাম্পটন কোর্ট প্রাসাদ অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে ব্রিটিশ রাজবংশ দ্বারা অধ্যুষিত ছিল না এই দুর্গ মূলত কার্ডিনাল থমাস উলসির উদ্দেশ্য তৈরি হয়েছিল।তবে 1529 সালে কার্ডিনালের আনুগত্য অস্বীকার করা হয় এবং এই দুর্গ রাজা অষ্টম হেনরি দ্বারা অধ্যুষিত হয়। লন্ডন শহরের দক্ষিণ পশ্চিমে টেমস নদীর পাশে অবস্থিত। বাস, ট্রেন, ট্যাক্সি, গাড়ি, নৌকা ইত্যাদি দ্বারা এই গন্তব্য পরিদর্শন করা সম্ভব।
পরিদর্শন করার সেরা সময়: 24, 25 এবং 26শে ডিসেম্বর ছাড়া হ্যাম্পটন কোর্ট প্রাসাদ সারাবছর খোলা থাকে।এই প্রাসাদ সোমবার থেকে রবিবার পর্যন্ত খোলা থাকে।আপনি যদি গ্রীষ্মকালে এই প্রাসাদ পরিদর্শন করতে আসেন তাহলে আপনি এইসময় একটি ঘোড়ার গাড়ীর ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন যা আপনাকে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর এই অসাধারণ বাগানের মধ্যে একটি মনোরম সফর প্রদান করবে।
Related articles
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত পরিবর্তন নেই স্টাফ রিপোর্টার (১০ মিনিট আগে) ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৬:১৪ অপরাহ্ন mzamin facebook sharing button twitter sharing button skype sharing button telegram sharing button messenger sharing button viber sharing button whatsapp sharing button প্রবল আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। এর মাধ্যমে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজন এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে নতুন আইনে শাস্তি কিছুটা কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। তাই শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এ আইনে রয়েই গেছে। বুধবার পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতি করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি, বরং তা আগের মতোই রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ও ২৮ ধারা দুটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে ধারা দুটি বাতিলের আহ্বান করা হয়েছিল। শাস্তি কমিয়ে এই দুটি বিধান রেখে দেয়ায় এর অপপ্রয়োগ ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের সুযোগ থেকেই যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটি কার্যকর হলে আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভারসহ সবকিছু জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত এক ধরনের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞাপন আইনের চারটি ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। সাইবার-সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ চায়, ডিজিটাল বা সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের শাস্তি হোক। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশির ভাগ ধারা সন্নিবেশিত থাকায় এই আইন কার্যকর হলে পূর্বের ন্যায় তা আবারও সাংবাদিক নির্যাতন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।
HimalaySep 20, 2023