হিমালয় ডেস্কঃ পোর্টোফিনো একটি ক্ষুদ্র মৎস্যজীবিদের গ্রাম যা সমুদ্র দ্বারা আশ্রিত। বিশেষ করে সন্ধ্যা বেলায় সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় এই ভূদৃশ্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় দেখায় । এই ভূদৃশ্যের সবচেয়ে ভালো বৈশিষ্ট্যটি হল এটি খুব একটা বৃহৎ নয় এবং প্রত্যেকটি সৈকত পায়ে হাঁটা দুরত্বে অবস্থিত।তাছাড়াও পোর্টোফিনো সম্পর্কে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এখানকার জীবনধারা। তাই, এই স্থানটি বিভিন্ন শিল্পীদের দ্বারা প্রশংসিত এবং হলিউড তারকা এবং বিভিন্ন ধনী মানুষদের দ্বারা পরিদর্শিত।এখানে কিছু নৈমিত্তিক পর্যটক দোকান ও তার পাশাপাশি বিশ্বের কিছু সুপরিচিত ডিজাইনারদের সর্বোকৃষ্ট বুটিক রয়েছে।
একইভাবে, খাদ্যের ব্যাপারেও এখানে বিভিন্ন বৈচিত্র্য রয়েছে। পর্যটকরা সাধারণ ইতালীয় খাবার খেতে পারেন তার পাশাপাশি একটি অসাধারণ ভোজনের জন্য যেতেও পারেন।পর্যটকদের এটি মনে করিয়ে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে পোর্টোফিনোতে ডিনার রাত 8টার আগে শুরু হয় না এবং সপ্তাহান্তে এই স্থানগুলি ব্যস্ত থাকতে পারে তাই আপনি যদি সপ্তাহান্তে একটি নির্দিষ্ট স্থানে খেতে চান তাহলে আপনাকে অগ্রিম রিজার্ভেশন করে রাখতে হবে।ইতালীয় খাবারের সঙ্গে অনেক মানুষ ওয়াইন খেতে পছন্দ করেন কারণ এই স্থানটি কিছু অসাধারণ ওয়াইন( মাদক দ্রব্য)-এর জন্য সুপরিচিত, যা সকলেই জানে।কিন্তু অ্যালকোহলবিহীন পানীয় এবং সফ্ট ড্রিঙ্কও এখানে সহজলভ্য।
এই অঞ্চলের রাজধানী হল জেনোয়া যা ক্রিস্টোফার কলম্বাসের জন্মস্থান। সেন্ট জর্জের উৎসব একটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব যা প্রতি বছর 23শে এপ্রিল পালিত হয়। জলের ভিতর স্থিত ক্রাইস্ট অফ অ্যাবিসের মূর্তিটি মৎস্যজীবীদের সুরক্ষার জন্যে রাখা হয়েছে। পোর্টোফিনো উপকূলের নিকটস্থ সমুদ্র বর্তমানে একটি সামুদ্রিক সংরক্ষণ হিসেবে রাখা হয়েছে।
পোর্টোফিনো কোথায়: পোর্টোফিনো উত্তর ইতালীর লিগুইরা অঞ্চলে অবস্থিত এবং ইতালীয় রিভিয়েরার অংশ।
পরিদর্শনের সেরা সময়: এখানকার ভূপ্রকৃতি একটি মধ্যপন্থী জলবায়ুর অধিকারী কিন্তু জুলাই ও আগস্ট মাসে গরম অনুভূত হয়। এখানে কখনও কখনও ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হয় যা দর্শকরা সাধারনভাবে উপভোগ করে থাকে। বছরের যেকোনো সময়ই এই স্থানটি পরিদর্শন করা যেতে পারে কিন্তু বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে পর্যটকদের আধিক্য দেখা যায়।
নিকটবর্তী আকর্ষণ: সান্তা মার্গারিটা লিগার, পিসা, সিং টেরে, ব্যাসিলিকা ডি স্যান সালভাতোর দেই ফিয়েস্কি । পিসার হেলানো মিনার, আ্যমালফি উপকূল, ভেনিস, কলোসিয়াম, রোম, পোর্টোফিনো, ইউফিজি গ্যালারী, পম্পেই।
ভেনিস: ভেনেটোর রাজধানী ভেনিস এক স্বতন্ত্র আকর্ষণ সহ একটি অনন্য স্থান।এই শহরের প্রতিটি স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্থানের একটি ইতিহাস রয়েছে। এখানে অবস্থিত খালের কারনে ভেনিস জলের শহর হিসাবে সুপরিচিত এবং এবং এই অঞ্চলের ইতিহাসকে সমাদর করার সবচেয়ে ভালো উপায় হল এই খালগুলি অন্বেষণ করা। চারটি সেতু দ্বারা বিস্তৃত গ্রান্ড ক্যানাল(বৃহত্তম খাল) সহ এখানে 150টিরও অধিক খাল রয়েছে যেগুলি এই শহর জুড়ে পরিবহন করার প্রধান মাধ্যম। এটি ভেনিসের গুরুত্বপূর্ণ ‘স্ট্রীট’ নামে পরিচিত এবং পর্যটকরা গ্রান্ড ক্যানাল-এ পরিভ্রমণ করলে, এটি সম্বন্ধে বেশী জানার সুযোগ পায়।কিছু কিছু সেতু যেমন ‘ব্রীজ অফ সাই’ বেশ বিখ্যাত। ভেনিসের এই খালগুলি পরিবহনের একটি প্রধান মাধ্যম হওয়ায় ভারী ট্রাফিক অনুভব করতে পারেন কিন্তু নৌকাগুলি যথেষ্ট বড় হওয়ায় আপনি আরামে বসে ছবি তোলা এবং আপনার পথ নির্দেশকের নির্দেশিকা শুনতে পারেন। যদিও শিল্প দূষণ সাম্প্রতিক কালে কমে গেছে তবে এই খালের জল এখনও কলুষিত। এই কারণে খালগুলির নিয়মিত পরিচর্যা দরকার।এই বাস্তবতা সত্ত্বেও ভেনিসের এই খাল ইউরোপের সেরা আকর্ষণ এবং এই শহরের সৌন্দর্য এবং স্বতন্ত্রতা অন্বেষণ করার এক মাত্র উপায় হল এই খালের মধ্যে দিয়ে নৌকা সফর।ঐতিহ্যগত ভেনিসীয় রোয়িং নৌকা গন্ডোলা ভেনিসে অত্যন্ত প্রচলিত, তবে বর্তমানে এগুলি নৌচালন প্রতিযোগিতা ও পর্যটকদের বহন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। অত:পর এই বিখ্যাত হস্তনির্মিত নৌকা একটি পর্যটক আকর্ষণের থেকেও আরও আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ও ভেনিসে পরিবহনের একটি প্রধান উপায়। এই অনন্য যাত্রার অভিজ্ঞতা ছাড়াও পর্যটকরা ভেনিসের বৈচিত্র্যময় খাদ্য অন্বেষণ করার চেষ্টা করতে পারেন এবং ভ্রমনের সময় স্থানীয় খাবার যেমন ‘বাকালা মন্টেকাটা’-র স্বাদ গ্রহণ করতে পারেন। এটা সবাই জানে যে ভেনিস বিশ্বের সবচেয়ে রোমান্টিক শহরগুলোর মধ্যে এক অন্যতম। নিউ ইয়র্ক টাইমসে বলা হয়েছে যে এটি মানুষ দ্বারা দ্বারা নির্মিত নিঃসন্দেহে এক অত্যন্ত সুন্দর শহর। অসাধারণত্ব,রহস্য পাশাপাশি সৌন্দর্য সহ ভেনিস, সকলের জীবনে একবার অবশ্য গন্তব্য হওয়া উচিত।
প্রতি বছর এপ্রিলের 25 তারিখে ভেনিসের রক্ষাকারী সন্ত, ধর্মপ্রচারক সেন্ট মার্ককে শ্রদ্ধা জানানো হয়। যদিও এই শহর একশত খাল ও দ্বীপপুঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত, তবে গ্র্যান্ড ক্যানাল এখানকার সবচেয়ে বৃহত্তম এবং গুরুত্বপূর্ণ খাল। এটি প্রায় 2.5 মাইল দীর্ঘ এবং ষোল ফুট গভীর। শেক্সপীয়ার এই শহর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তার দুট উপন্যাস লিখেছেন। এই গ্র্যান্ড ক্যানালের তীরে রেস্তোরাঁ এবং হোটেল সহ 170টিরও অধিক ভবন রয়েছে। ভেনিস তার শিল্পকলা ও স্থাপত্য শিল্পের কারণে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যটক গন্তব্য। ভেনিস আড্রিয়াটিক সাগর সীমান্তের উপর ইতালির উত্তরপূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এবং প্রায় 118টি ছোট দ্বীপপুঞ্জের উপর নির্মিত। এটি ভেনেটোর রাজধানী শহর এবং এই দেশের এক বৃহত্তর শহর।
পরিদর্শনের সেরা সময়: ভেনিসে শীতকাল অত্যন্ত ঠান্ডা হয় এবং ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের গড় তাপমাত্রা থাকে 1 ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে 6 ডিগ্রি সেলসিয়াস।শীতকালে এই শহরে অত্যন্ত কুয়াশা দেখা যায়।এই শহর গ্রীষ্মকালে গরম ও আর্দ্র হয় এবং সর্বোচ্চ গরম হয় এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে।
Related articles
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত পরিবর্তন নেই স্টাফ রিপোর্টার (১০ মিনিট আগে) ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৬:১৪ অপরাহ্ন mzamin facebook sharing button twitter sharing button skype sharing button telegram sharing button messenger sharing button viber sharing button whatsapp sharing button প্রবল আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। এর মাধ্যমে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজন এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে নতুন আইনে শাস্তি কিছুটা কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। তাই শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এ আইনে রয়েই গেছে। বুধবার পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতি করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি, বরং তা আগের মতোই রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ও ২৮ ধারা দুটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে ধারা দুটি বাতিলের আহ্বান করা হয়েছিল। শাস্তি কমিয়ে এই দুটি বিধান রেখে দেয়ায় এর অপপ্রয়োগ ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের সুযোগ থেকেই যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটি কার্যকর হলে আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভারসহ সবকিছু জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত এক ধরনের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞাপন আইনের চারটি ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। সাইবার-সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ চায়, ডিজিটাল বা সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের শাস্তি হোক। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশির ভাগ ধারা সন্নিবেশিত থাকায় এই আইন কার্যকর হলে পূর্বের ন্যায় তা আবারও সাংবাদিক নির্যাতন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।
HimalaySep 20, 2023