কুয়েত একটি ছোট আরব দেশ এবং এটি নয়টি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। পশ্চিম এশিয়ার এ দেশটি আরবের উত্তরাঞ্চলীয় একটি দেশ। পারস্য উপসাগরের প্রান্তে এর অবস্থান। ইরাক ও সৌদি আরবের সঙ্গে এর সীমান্ত রয়েছে। এই দেশটি স্টেট অফ কুয়েত নামেও পরিচিত। ১৯৬১ সালে ব্রিটিশের কাছে থেকে স্বাধীনতা পায় কুয়েত। কুয়েতে প্রথম তেলের খনি পওয়া যায় ১৯৩৮ সালে। দেশটিতে ১৯৪৬ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়। গত শতাব্দীর আশির দশকে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। শেয়ারবাজারে ধস নামায় শুরু হয় অর্থনৈতিক সংকট। ১৯৯০ সালে কুয়েত দখল করে ইরাক। আন্তর্জাতিক জোট বাহিনীর হস্তক্ষেপের পর ১৯৯১ সালে এই দখলদারিত্বের অবসান ঘটে। যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অর্থনীতি এবং দেশের অবকাঠামো পুনর্গঠনে জোর তৎপরতা শুরু হয়।এখানকার জনসংখ্যা ৪০ লক্ষের আশেপাশে। এখানকার রাজধানী কুয়েত সিটি। বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে কুয়েত অত্যন্ত শক্তিশালী। বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ তেলের মজুদ রয়েছে দেশটিতে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রার মধ্যে কুয়েতি দিনার অন্যতম। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে পঞ্চম অবস্থান তাদের। মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় অপেরা হাউসের অবস্থান এই দেশটিতে। এ কারণে কুয়েতকে ‘উপসাগরের হলিউড’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
কুয়েতের জনসংখ্যা: কুয়েত পৃথিবীতে একমাত্র দেশ যেখানে গরমের কারণে জাতীয় দিবস পাল্টাতে হয়েছে। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ১ জুন জাতীয় দিবস পালন করতো। ১৯৬২ পর ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় দিবস পালন করা হয়। কুয়েতের অফিসিয়াল ভাষা আরবি। এখানকার মুদ্রার মান পৃথিবীর যেকোনো দেশের চাইতে বেশি। এখানে ভোটের মাধ্যমে পার্লামেন্ট গঠিত হয়। ২০০৫ সাল থেকে কুয়েতে মহিলাদের নির্বাচন লড়ার অধিকার সুনিশ্চিত হয়। বিশ্বে পঞ্চম সব চাইতে বড়ো তেল ভান্ডার কুয়েতের আছে।
কুয়েত সিটি: কুয়েতের ৯০% ইনকাম তেল থেকেই আসে। এখানকার মিডিয়াকে সম্পূর্ণ স্বাধিনতা দেওয়া আছে। কুয়েতে প্রাকৃতিক জল নেই। একারণে কুয়েতে অপরিশোধিত জলকে ওয়াটার ডি নাইজেশান পদ্ধতিতে পান করার উপযোগী করা হয়। কুয়েতে আজানের সময় নাচ, গান, খাওয়া দাওয়া সমস্ত কিছু নিষিদ্ধ। কুয়েতে ঈগল সব যায়গায় দেখা যায়। তাই এখানকার মুদ্রাতেও ঈগলের ছবি আছে। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ কোটিপতি। কুয়েতে চাষবাস হয়না বললেই চলে। কারণ মাত্র ১% চাষ যোগ্য জমি আছে কুয়েতে। ৪২% মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। কু্য়েতের জিডিপি ৭২০০০ ডলার। কুয়েতের রাজধানীতে ৪ লক্ষ মানুষ বসবাস করে। এখানে খুব গরম পড়ে এবং কুয়েতে সব চাইতে বেশি গরম ৫৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস, ১২ জুলাই ২০১২ সালে রেকর্ড করা হয়।
একনজরে কুয়েত
পুরো নাম : দওলত আল কুয়েত।
রাজধানী ও সর্ববৃহৎ শহর : কুয়েত সিটি।
সরকারি ভাষা : আরবি
জাতিগোষ্ঠী : আরব (৬০%), এশীয় (৩৭.৮%), আফ্রিকান (১.৯%)।
ধর্ম : ইসলাম।
জাতীয় দিবস: ২৪ ফেব্রুয়ারি
সরকারপদ্ধতি : ইউনিটারি কনস্টিটিউশনাল মনার্কি।
আমির : সাবাহ আহমাদ আল-সাবাহ।
যুবরাজ : নাওয়াফ আহমাদ আল-সাবাহ।
আইনসভা : জাতীয় পরিষদ।
আয়তন : ১৭ হাজার ৮২০ বর্গকিলোমিটার।
জনসংখ্যা : ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩৯৫।
ঘনত্ব : প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫১৮.৫ জন।
জিডিপি মোট : ৩১৭.০৬৮ বিলিয়ন ডলার,
মাথাপিছু : ৭৩ হাজার ১৭ ডলার।
মুদ্রা : কুয়েতি দিনার।
জাতিসংঘে যোগদান : ১৪ মে ১৯৬৩ সাল।
গ্রন্থনা : তামান্না মিনহাজ
Previous Postকচুয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চেয়ারম্যান পদে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন শাহজাহান শিশির
Next Postজলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জ্ঞান ও সচেতনতা বাড়ানো দরকার
Related articles
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত পরিবর্তন নেই স্টাফ রিপোর্টার (১০ মিনিট আগে) ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৬:১৪ অপরাহ্ন mzamin facebook sharing button twitter sharing button skype sharing button telegram sharing button messenger sharing button viber sharing button whatsapp sharing button প্রবল আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। এর মাধ্যমে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজন এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে নতুন আইনে শাস্তি কিছুটা কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। তাই শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এ আইনে রয়েই গেছে। বুধবার পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতি করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি, বরং তা আগের মতোই রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ও ২৮ ধারা দুটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে ধারা দুটি বাতিলের আহ্বান করা হয়েছিল। শাস্তি কমিয়ে এই দুটি বিধান রেখে দেয়ায় এর অপপ্রয়োগ ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের সুযোগ থেকেই যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটি কার্যকর হলে আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভারসহ সবকিছু জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত এক ধরনের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞাপন আইনের চারটি ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। সাইবার-সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ চায়, ডিজিটাল বা সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের শাস্তি হোক। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশির ভাগ ধারা সন্নিবেশিত থাকায় এই আইন কার্যকর হলে পূর্বের ন্যায় তা আবারও সাংবাদিক নির্যাতন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।
HimalaySep 20, 2023