২০১৮ সালের মার্চ মাসে নেপালে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজের যে দুর্ঘটনা হয়েছে, আরেকটু দায়িত্বশীল হলেই এটা এড়ানো যেতো। নেপালে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার বিষয়ে সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এম নাঈম হাসান এই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, কন্ট্রোলার আরও দায়িত্বশীল হলে দুর্ঘটনাটি ঘটত না। এভিয়েশন কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সোমবার (২৮ জানুয়ারি) তিনি এ মন্তব্য করেন। সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘পাইলটের কিছু ভুল ছিল। তবে কন্ট্রোল টাওয়ার চাইলে বা আরও দায়িত্বশীল হলে অন্তত বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটত না।’
এদিকে নেপালের দুর্ঘটনা তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, ককপিটে পাইলটের ধূমপানের কারণেই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের মার্চ মাসে ইউএস-বাংলা বোম্বারডিয়ার ইউবিজি-২১১ বিমানটি নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, নিষেধ থাকা সত্ত্বেও বিমানের ককপিটে পাইলটের ধূমপান।
রিপোর্টে আরও বলা হয়, কমিশন সূত্র জানায় বিমানটির দায়িত্বে থাকা পাইলট ধূমপায়ী ছিলেন। ককপিট ভয়েস রেকর্ডার বা সিভিআর থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক যেকোনো রুটে ধূমপান নিয়ে ইউএস-বাংলা কোম্পানির বিধি নিষেধ থাকলেও তা মানা হয়নি। দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষ হয়তো এ বিষয়ে জানতেন না।
কমিশন আরও জানায়, তাই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, পরিস্থিতি সম্পর্কে ‘পাইলট ও ক্রু’ সদস্যদের পর্যাপ্ত মনোযোগের অভাব। তবে নেপালের দুর্ঘটনা তদন্ত কমিশনের এই বক্তব্য মেনে নেয়নি ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ। সিভিল এভিয়েশন সূত্র জানায়, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ফ্লাইট ডাটা অনুসারে নেপালের তদন্ত কমিশনের দাবির সত্যতা নেই।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটিতে ৪ জন ক্রু ও ৬৭ যাত্রীসহ ৭১ জন আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৪ জন ক্রুসহ ২৭ জন বাংলাদেশি, ২৩ জন নেপালি ও একজন চীনা যাত্রী নিহত হন। আহত হন ৯ জন বাংলাদেশি, ১০ জন নেপালি ও ১ জন মালদ্বীপের নাগরিক। এর আগে, বিমান দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পাইলটের ‘ক্লান্তি, মানসিক অবসাদ ও নির্ঘুম’ থাকাকে দায়ী করলেও ইউএস-বাংলা বলছে দুর্ঘটনা ঘটেছে বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে পাইলটের ভুল বোঝাবুঝিতে।