যুক্তরাষ্ট্রে এক দশকের বেশি সময় ধরে কোমায় থাকা এক নারীর সন্তান প্রসবের ঘটনায় হাসপাতালের একজন পুরুষ নার্সকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে স্থানীয় পুলিশ এই গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ডয়েচে ভেলে খবরটি নিশ্চিত করে।
গত ২৯ ডিসেম্বর অ্যামেরিকার অ্যারিজোনার ফিনিক্স এলাকার এক হাসপাতালে কোমায় থাকা ওই নারী সন্তান প্রসব করেন। এর আগে ২৪ ডিসেম্বর তার গর্ভ ধারণের বিষয়ে নিশ্চিত হন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ৮ মাসে গর্ভধারণ বিষয়ক কোনো জটিলতা বা কোনো অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়নি।
পরে পুলিশ শিশুটির ডিএনএ টেস্টের পাশাপাশি হাসপাতালের কর্মচারীদের ডিএনএ পরীক্ষা করে নাথান সাদারল্যান্ড নামের ৩৬ বছর বয়সি এ কর্মচারীকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ কর্মকর্তা জেরি উইলিয়াম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সেই নারীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত শুরু করি৷ শুরু থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পূর্ণাঙ্গ সহায়তা করে আসছে। এটিকেযৌন নির্যাতনের ঘটনা হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।’ তিনি জানান, গত ৩০ বছরের পেশাজীবনে এমন ধরনের অভিযোগ কখনোই তার কাছে আসেনি।
অভিযোগ তদন্তকারী পুলিশ সার্জেন্ট টমি থমসন জানান, গ্রেপ্তার হওয়া সাদারল্যান্ড একজন লাইসেন্সধারী পুরুষ নার্স। হাসপাতালে তিনি সেই নারীর সেবার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি জানান, শিশুপুত্রটি সুস্থ আছে। তিনি আশা করেন, শিশুটি যথাযথ ভালোবাসা ও যত্নেই লালিত হবে। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কোনো জন্মের ঘটনা নির্ধারণ করতে পারি না, কিন্তু জন্ম নেওয়া শিশুটিকে ভালোবাসতে ও সুন্দর পরিবেশ দিতে পারি’।
কোমায় থাকা অবস্থায় সন্তান প্রসব করা নারীর পরিবারের আইনজীবী জানান, সেই নারী মুখভঙ্গির মাধ্যমে মনোভাব প্রকাশ করতে পারেন, সামান্য ঘাড় ও মাথা নাড়তে পারেন, কিন্তু কথা বলতে পারেন না। গত এক দশক ধরে এমন অবস্থায় রয়েছেন তিনি। তবে শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ্। শিশুটি পরিবারের কাছে যত্নে ও ভালোবাসায় লালিত হবে, এমন নিশ্চয়তাও দেয়া হয়েছে।
এদিকে সেই হাসপাতালের নার্সিং ফ্যাসিলিটি বিভাগের প্রধান নির্বাহী এ ঘটনার পর পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি ভীষণ ঘৃণ্য কাজ। আমাদের দায়িত্ব ছিল তার পূর্ণাঙ্গ সেবা নিশ্চিত করা। আমরা সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছি।’ (বিচিত্র)