প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সবুজ শ্যামল এ বাংলাদেশ যেমন বিদেশী পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় দেশ, তেমনি এদেশের অধিকাংশ মানুষই ভ্রমণ পিয়াসু। নানা প্রতিকূলতার মাঝে বাস করেও অবসর পেলেই তারা পরিবার পরিজনকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে ভালবাসেন। রেল, সড়ক এবং আকাশ পথ ছাড়াও নৌপথে ভ্রমণের চমৎকার সুযোগ রয়েছে আমাদের দেশে। উন্নত বিশ্বের তুলনায় খুবই কম খরচে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে এখানে। তাছাড়া, ঋতু বৈচিত্র্যে ভরপুর এদেশের আবহাওয়াও প্রায় সারাবছরই নাতিশীতোষ্ণ। এদেশের মানুষ যেমন অতিথিপরায়ণ, তেমনি এ ঋতুতে ঘুরেবেড়ানোর মজাও অন্যরকম। হালকা শীতল পরিবেশে শহরের মানুষগুলোও পেতে পারেন ভিন্নরকম অনুভূতি। এসময় স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের অফুরন্ত ছুটির সাথে সাথে কিছুকিছু পেশার অভিভাবকগণও পেয়ে থাকেন শীতকালীন ছুটি। অন্যদিকে গ্রামবাংলায় আমন মৌসুম শেষ হওয়ায় কৃষকদের মুখে থাকে অকৃত্রিম হাসি ও অবসর। এ সুযোগে সবাই যেমন ঘুরে আসতে পারেন নিত্যনতুন জায়গায়, তেমনি পর্যটন এলাকার মানুষগুলো পর্যটকদের সেবায় সাময়িকভাবে এগিয়ে আসতে পারেন। সবমিলিয়ে পর্যটন শিল্পে দারুণ একটি সম্ভাবনাময় দেশ বাংলাদেশ। যে সুযোগ কাজে লাগিয়ে মালয়েশিয়া, আয়ারল্যান্ডসহ অনেক দেশ আজ এগিয়ে গেছে। চমৎকার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিগত বছরগুলোতে সেভাবে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে পারিনি আমরা। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশী রেস্তোরাঁগুলোতে খাবারের মূল্য অনেক বেশী হওয়াতে এবং রাস্তাঘাটগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় একদিকে বিদেশী পর্যটক হারাচ্ছেন আমাদের পর্যটন ব্যবসায়িরা। অন্যদিকে বিশাল সম্ভাবনাময় এ খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম আদি নিবাস এবং একসময়ে বৌদ্ধ রাজা কতৃক শাসিত বাংলাদেশে রয়েছে প্রায় ২ হাজার বৌদ্ধবিহার। এ বিহারগুলো সংস্কারের মাধ্যমে একটি ধর্মের সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলার পাশাপাশি চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ বিদেশি পর্যটকদের এদেশের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে পারে সরকার। হোটেল, রেস্তোরার মালিক এবং সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নানামুখী সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসা উচিত এখনি। তবেই এদেশ পর্যটকদের মিলন মেলায় পরিণত হবে। পর্যটনশিল্পে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
সবাইকে বিজইয় দিবসের শুভেচ্ছা।
Previous Postবাংলাদেশ ইতিহাসের অপরিহার্য সন্তান
Next Postনাটকীয়ভাবে বরিশাল-৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন জাহাঙ্গীর
Related articles
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত পরিবর্তন নেই স্টাফ রিপোর্টার (১০ মিনিট আগে) ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৬:১৪ অপরাহ্ন mzamin facebook sharing button twitter sharing button skype sharing button telegram sharing button messenger sharing button viber sharing button whatsapp sharing button প্রবল আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। এর মাধ্যমে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজন এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে নতুন আইনে শাস্তি কিছুটা কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। তাই শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এ আইনে রয়েই গেছে। বুধবার পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতি করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি, বরং তা আগের মতোই রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ও ২৮ ধারা দুটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে ধারা দুটি বাতিলের আহ্বান করা হয়েছিল। শাস্তি কমিয়ে এই দুটি বিধান রেখে দেয়ায় এর অপপ্রয়োগ ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের সুযোগ থেকেই যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটি কার্যকর হলে আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভারসহ সবকিছু জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত এক ধরনের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞাপন আইনের চারটি ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। সাইবার-সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ চায়, ডিজিটাল বা সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের শাস্তি হোক। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশির ভাগ ধারা সন্নিবেশিত থাকায় এই আইন কার্যকর হলে পূর্বের ন্যায় তা আবারও সাংবাদিক নির্যাতন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।
HimalaySep 20, 2023