আমাদের কারো কারো প্রায়ই ফজর নামায কাযা হয়ে যায়। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় আমরা হয়তো ফজরে ওঠার জন্য মোবাইল ফোন বা ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রাখি। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে হয়তো আমরা এতো ব্যস্ত থাকি যে, ক্লান্তির কারণে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পর আর কোনো পারিপার্শ্বিক চেতনা থাকেনা।
ফলে প্রায়ই আমাদের ফজর নামায কাযা হয়ে যায়। অনেকেই এক্ষেত্রে হতাশ হয়ে বরং আরো কিছু সময় ঘুমিয়ে নিয়ে বেলা করে ঘুম থেকে উঠে। এভাবে একসময় এটাই অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।
তাই এই ছোট লেখায় নিম্নে সংক্ষিপ্ত চারটি পরামর্শ আলোচনা করা হলো- আশা করা যায় পরামর্শ চারটি আপনাকে ফজরের নামায কাযা করা থেকে ফেরাতে ভূমিকা রাখবে।
১. প্রথমত আপনি যখনই জাগ্রত হবেন, অলসতা না করে তখনই ফজরের নামায আদায় করে নিবেন। যদি আপনার ঘুম থেকে উঠতে দেরিও হয় বা পুরোপুরি সূর্যোদয় হয়ে যায়, তথাপি আল্লাহর রাসূলের সূন্নত হল কখনো ফজর ছুটে গেলে ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে আদায় করে নেয়া।
২. আপনি সুন্নত ও নফল নামাযের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। ফলে তা ইয়াওমুল হিসাবে আপনার ফজর আদায়ে ত্রুটি ও কমতির ক্ষতিপূরণ হিসেবে কাজে আসবে। কেননা রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, “কেয়ামত দিবসে সর্ব প্রথম নামাযের হিসাব নেয়া হবে। যদি নামায ঠিক থাকে তাহলে তার সমস্ত আমল ঠিক থাকবে, আর যদি নামায ঠিক না থাকে তাহলে তার কোন আমল ঠিক থাকবে না।” (বুখারি ও মুসলিম)
৩. ফজর নামায কাযা হওয়াকে অন্য নামাযগুলো কাযা করার অজুহাত বানাবেন না যে- ‘আজ যেহেতু ফজর কাযা হয়ে গেছে, থাক, তাহলে আগামিকাল থেকেই আবার সব নামায পড়া শুরু করবো!’। সাবধান! এটা হবে শয়তানের অনেক বড় ফাঁদে পা দেয়া। প্রতি ওয়াক্ত নামায স্বতন্ত্র একেকটি ফরয। প্রত্যেক নামাযের হিসাবও স্বতন্ত্র। আদায় করলে মহা প্রতিদান, অনাদায়ে মহা শাস্তি। তাই ফজর কাযা হয়ে গেলেও অন্য সকল ওয়াক্তের নামাযগুলো সঠিক সময়ে আদায়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন যাতে সেগুলো কখনোই আপনার দ্বারা কাযা না হয়ে যায়।
৪. অবশ্যই জামা’আতের সহিত নামায আদায়ে পূর্ণ সচেষ্ট হোন। কেননা, জামা’আতের গুরুত্ব অন্তরে না থাকলেই এভাবে নামায কাযা হওয়াটা এক সময় স্বাভাবিক হয়ে যায়। প্রিয় নবী সা. বলেন, যে গ্রামে বা মাঠে কমপক্ষে তিনজন লোক থাকে আর সেখানে জামা’আতের সহিত নামায আদায় করা হয় না, তাদের উপর শয়তান প্রভাব বিস্তার করে ফেলে। কাজেই জামা’আতকে জরুরী মনে কর। দল ত্যাগকারী ছাগলকে বাঘে খেয়ে ফেলে। আর মানুষের বাঘ হল শয়তান। (আবূ দাঊদ, নাসাঈ, আহমদ) বোনেরা ওয়াক্ত আসার প্রথম সময়েই নামায আদায়ের অভ্যেস করে নিন।
এই পরামর্শগুলো অনুসরণের পাশাপাশি আপনি ফজরের নামায প্রত্যহ আদায় করার অব্যাহত চেষ্টা করতে থাকুন । আশা করা যায়, এর মাধ্যমে আপনি ফজর সহ অন্য সকল ওয়াক্তের নামাযগুলো কাযা হওয়া থেকে নিজেকে ফেরাতে পারাতে পারবেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে পাঁচ ওয়াক্ত নামায যথা সময়ে উত্তমরূপে আদায়ের তাওফিক দান করুন