উল্লেখযোগ্য খবর
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত পরিবর্তন নেই স্টাফ রিপোর্টার (১০ মিনিট আগে) ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৬:১৪ অপরাহ্ন mzamin facebook sharing button twitter sharing button skype sharing button telegram sharing button messenger sharing button viber sharing button whatsapp sharing button প্রবল আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। এর মাধ্যমে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজন এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে নতুন আইনে শাস্তি কিছুটা কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। তাই শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এ আইনে রয়েই গেছে। বুধবার পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতি করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি, বরং তা আগের মতোই রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ও ২৮ ধারা দুটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে ধারা দুটি বাতিলের আহ্বান করা হয়েছিল। শাস্তি কমিয়ে এই দুটি বিধান রেখে দেয়ায় এর অপপ্রয়োগ ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের সুযোগ থেকেই যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটি কার্যকর হলে আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভারসহ সবকিছু জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত এক ধরনের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞাপন আইনের চারটি ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। সাইবার-সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ চায়, ডিজিটাল বা সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের শাস্তি হোক। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশির ভাগ ধারা সন্নিবেশিত থাকায় এই আইন কার্যকর হলে পূর্বের ন্যায় তা আবারও সাংবাদিক নির্যাতন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।

কর্মক্ষেত্রে নারী যত সফল, ব্যক্তিজীবনে নয়

সফল কর্মজীবন ও চমৎকার একটি ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য আনা অনেক মানুষেরই জীবনের লক্ষ্য। তবে পুরুষের চেয়ে একজন নারীর ক্ষেত্রে এই ভারসাম্য রক্ষা করা যেন বেশি কঠিন। এমনকি নারী-পুরুষের সমতা সবচেয়ে বেশি—এমন দেশগুলোতেও দেখা যায় কর্মক্ষেত্রে সফল একজন নারী ব্যক্তিজীবনে সঙ্গী হারিয়ে ফেলেন। সম্প্রতি এ বিষয়ে সুইডেনে গবেষণা চালিয়েছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। গবেষণায় দেখা গেছে, রাজনীতি বা ব্যবসায়ে শীর্ষস্থানীয় পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর নারীর বিবাহবিচ্ছেদের হার নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। তবে পুরুষের ক্ষেত্রে এমনটা হয় না। শ্রমবাজারে নারী-পুরুষের সমতায় সুইডেনের অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য। সে দেশে ৩০ বছর আগে থেকেই পুরুষের তুলনায় উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণের হার বেশি। এ ছাড়া শ্রমবাজারে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণও প্রায় সমানে সমান। বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় সুইডেনে নারী প্রধান নির্বাহী, করপোরেট বোর্ডের সদস্য ও শীর্ষ পর্যায়ের সংসদ সদস্যদের অনুপাত সবচেয়ে বেশি। পারিবারিকভাবেও বেশ অগ্রগতি আছে। সফল ক্যারিয়ারসম্পন্ন নারীদের মধ্যে বিয়ে করার ও সন্তান ধারণের হার বাড়ছে। তবে নারীর কর্মজীবনের উন্নতির সঙ্গে ব্যক্তিজীবনের এগিয়ে যাওয়ার রেখাটা একে অপরকে ছেদ করে। দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সফলতা আসতে আসতে ব্যক্তিজীবনে সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হতে থাকে। একপর্যায়ে বিচ্ছেদ।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম সুইডেনে মেয়র নির্বাচনে নারীর সাফল্য ও ওই নারীদের ব্যক্তিজীবনের একটি চিত্র পর্যালোচনা করেছে। এতে দেখা গেছে, নির্বাচনী জয়ী হননি এমন নারীদের তুলনায় নির্বাচনে জয়ী নারীদের বিচ্ছেদের হার অনেক বেশি। এসব নারী নির্বাচনের চার বছর আগে থেকে বিবাহিত ছিলেন। অথচ পুরুষের ক্ষেত্রে বিজয়ী প্রার্থীর বৈবাহিক অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। কোম্পানির প্রধান নির্বাহী পদের ক্ষেত্রেও এমনটা দেখা গেছে। কোম্পানির সর্বোচ্চ অবস্থানে যাওয়া নারীর ব্যক্তিজীবন স্থিতিশীল থাকছে না। পদোন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিচ্ছেদের হার বেড়ে যাচ্ছে। নারীরা কি বিচ্ছেদ সহজে মেনে নেন? ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গবেষণায় এই প্রশ্নের উত্তর সুইডেনের ক্ষেত্রে ‘হ্যাঁ’। তবে কেন এটা, তা বলা বেশ কঠিন। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যেসব নারী শীর্ষ চাকরি পাওয়ার পর স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান, তাঁরা অন্য নারীদের তুলনায় নতুন করে সম্পর্কেও কম জড়ান।

শুধু ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গবেষণায় নয়, সুইডিশ আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যক্তিগত জীবনের বিনিময়ে নারীর কর্মজীবনে সাফল্য আসে। সুইডিশ গবেষক ওলে ফোলকে এবং জোহানা রিকন দেখেছেন যে নারীরা যখন তাদের কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি পেয়ে শীর্ষ পর্যায়ে যান, তখন তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়ে যায়। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার এক রকম নয়। দেখা যায়, পদোন্নতি পাওয়ার ৩ বছরের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কের বিপর্যয় হয় নারীদের। ওলে ফোলকে এবং জোহানা রিকন গত ৩০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন।

এই দ্বন্দ্বের কারণ কী? গবেষকেরা প্রথমেই অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে বাদ দিচ্ছেন। কারণ স্ত্রী পদোন্নতি পাওয়ার আগে থেকেই আর্থিকভাবে স্বাধীন ছিলেন। পদোন্নতির আগে বিবাহবিচ্ছেদ করলে তাঁদের অর্থনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো না। আসলে বিষয়টি নির্ভর করছে জীবন শুরুর আগে কী প্রতিশ্রুতি ছিল তাঁদের মাঝে। যে দম্পতি একসঙ্গে পথ চলার শুরুতে পুরুষ সঙ্গীর কর্মজীবনকে প্রাধান্য দিয়েছেন, পরবর্তী সময়ে নারীর পদোন্নতি ওই সম্পর্কে দ্বন্দ্ব তৈরি করে। ফলে বিচ্ছেদ হয়। এ ছাড়া ‘জেন্ডার ট্র্যাডিশন’ বলেও একটা বিষয় চলে আসে। ওই নারীর মা-বাবা কোনটিকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন, পরবর্তী সময়ে তাঁর সংসারে তা অনেক প্রভাব ফেলে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *