বিখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড, যার অনুসন্ধানী রিপোর্টের কারণে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। তিনিই ফাঁস করেছিলেন বিখ্যাত ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি। এবার তিনি বই লিখেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে। আর সেই বইয়েই উল্লেখ করেছেন, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসিকে একজন ‘কিলার’ বা খুনি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। যদিও ট্রাম্প বিষয়টি বলেছেন মশকরা করে।
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ফিয়ার: ট্রাম্প ইন দ্য হোয়াইট হাউজ’ বইয়ে এমন মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড। বইয়ের উদ্বৃতি দিয়ে আল জাজিরা লিখেছে, মিসরের রাজধানী কায়রোতে আটক ছিলেন মিসরীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনি আয়া হিজাজি। যুক্তরাষ্ট্র অনেক দেনদবার করে তার মুক্তির জন্য। মুক্তি নিশ্চিত হওয়ার পর আল সিসিকে নিয়ে ওই মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড ও তার বইয়ের প্রচ্ছদ
বইটিতে উডওয়ার্ড দাবি করেছেন, আয়া হিজাজিকে মুক্তির বিষয়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আল সিসির সাথে সমঝোতা নিয়ে ট্রাম্প আলোচনা করছিলেন তখনকার হোয়াইট হাউজের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা জন দাউদের সঙ্গে। ওই সময় দাউদকে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘মনে রাখুন আমি কার সাথে আলোচনা করছি। ওই ব্যক্তিটি হলো একটি ‘ফাকিং’ কিলার। আমি এটা শেষ করে এনেছি। সে আপনাকে ফোনে পেলে ঘামিয়ে ছাড়বে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে হিজাজিকে জেল থেকে মুক্তি দেয়া হয়। মানব পাচারের অভিযোগে প্রায় তিন বছর বন্দি থাকার পর তিনি মুক্তি পান। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো বোগাস বা বানোয়াট বলে প্রত্যাখ্যান করে। এর কয়েক সপ্তাহ আগে হোয়াইট হাউসে আবদেল ফাত্তাহ আল সিসিকে আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প, যে কাজটি সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কখনো করেন নি। সে সময় আল সিসিকে ট্রাম্প একজন ‘চমৎকার মানুষ’ বলে আখ্যায়িত করেন। এর এক বছরের কম সময় পরে আল সিসি মিসরের বিতর্কীত ও একদলীয় নির্বাচনে শতকরা ৯৭ ভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এরপর ফোন করে তাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান ট্রাম্প। ব্যাপক প্রচারণা পাওয়ার পর মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে উডওয়ার্ডের ওই বইটি। এতে ওভাল অফিসের ভিতরের উচ্চ মাত্রার জীবনযাপন নিয়ে সমালোচনামুলক তথ্য রয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত চরিত্র। এর আগে গত বছরের শেষ দিকে ‘ফায়ার এন্ড ফিউরি: ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ’ নামক একটি বই লিখেছিলেন মাইকেল উলফ। বব উডওয়ার্ডের বইতে বলা হয়েছে তার চরিত্র ভয়াবহভাবে ত্রুটিপূর্ণ। এতে আরো বলা হয়েছে, গত এপ্রিলে রাসায়নিক হামলার পর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প।
ওই বইয়ে বলা হয়েছে, একবার ট্রাম্প বলেছিলেন- চলো আমরা তাকে হত্যা করি। শুরু করা হোক। চল তাদের অনেককে হত্যা করি। বইটি প্রকাশের প্রাক্কালে ট্রাম্প টুইটারে উডওয়ার্ডের বইয়ের নিন্দা জানিয়েছেন। বলেছেন, এটা একটি ফিকশন বই।
‘ইতিহাসের অন্ধকার সময় পার করছে আমেরিকা’
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময় পার করছে আমেরিকা। দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গন -দু ক্ষেত্রেই এখন এমন অবস্থার মুখোমুখি আমেরিকা। এমনকি মার্কিন সরকার তার মিত্রদের সমর্থন পর্যন্ত হারিয়েছে। সম্প্রতিইরানের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রেসিডেন্ট রুহানি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, অতীতের চেয়ে আমেরিকার এখনকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি অনেক আলাদা এবং দেশটি এখন সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি। এখন আমেরিকার গবেষক, বুদ্ধিজীবী ও বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের অনেকেই একই কথা বলছেন এবং তাদের কেউ কেউ মার্কিন রাষ্ট্রনায়কদের বোকা বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। এ ধরনের ঘটনা মার্কিন ইতিহাসে কমই ঘটেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যাকে অনেকেই মানসিকভাবে অনুপযুক্ত মনে করেন
প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, আজকে ওয়াশিংটনের মিত্ররা আর রাজনৈতিকভাবে বসে নেই; এমনকি দীর্ঘদিনের মিত্ররা এখন গর্বের সঙ্গে আমেরিকা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কেবলমাত্র খারাপ কাজের জন্য বিখ্যাত কিছু দেশ আমেরিকাকে সমর্থন করছে।
This is true.
থ্যাংকস আ লট।