ডক্টর তুহিন মালিক: সরকারের দাবিকৃত, ‘সংবিধানসম্মত’ উপায়েই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি মানা সম্ভব। এভাবে এই ‘সংবিধানসম্মত’ রূপরেখার মধ্যে থেকেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা যায়।
‘সংবিধানসম্মত’ এই রূপরেখায় সাত দফার ভিত্তিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করাও সম্ভব।
রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিয়ে অবিলম্বে একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবেন। সংবিধানের ১২৩(ক) অনুযায়ী মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে গেলে এ ক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এবং ১২৩(খ) অনুযায়ী মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে গেলে ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে সংবিধানে কোনো বাধা নেই।
বিলুপ্ত সরকারের সব মন্ত্রী পদত্যাগ করবেন। শেখ হাসিনাকে রেখেই বিলুপ্ত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, তার নেতৃত্বে সব দলের সমন্বয়ে সম্মিলিত একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হবে। উপদেষ্টা হওয়ার ক্ষেত্রে যেহেতু সংসদ সদস্য হওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তাই যে কেউ বা যতজন ইচ্ছা নির্বাচনকালীন উপদেষ্টা রাখা যাবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে প্রতিনিধিত্বমূলক এক বা একাধিক করে উপদেষ্টা নিয়ে ১০ সদস্যের একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা যায়। তবে নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কোনো মন্ত্রণালয় থাকবে না। তার কোনো কাজও থাকবে না; বরং উপদেষ্টাদের উপদেশ অনুযায়ীই প্রধানমন্ত্রীসহ নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালিত হবে।
সব রাজবন্দীকে মুক্তি প্রদান ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের কাজ সর্বদলীয় উপদেষ্টা পরিষদের সুপারিশ অনুযায়ী রাজনৈতিক বিবেচনায় করা যাবে। বেগম জিয়াসহ যাদের দণ্ড হয়েছে, রাষ্ট্রপতি তাদের দণ্ড মওকুফ করে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দেবেন।
প্রথমেই সব নির্বাচন কমিশনারকে পদত্যাগ করতে হবে। সর্বদলীয় উপদেষ্টা পরিষদের সুপারিশ অনুযায়ী- স্বাধীন, গ্রহণযোগ্য ও সক্রিয় নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। এরপরই রাষ্ট্রপতি অর্ডিন্যান্স জারি করে সর্বসম্মত সুপারিশে আরপিও সংশোধন করে এবং নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করে ইভিএম বাতিল ও নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা নেবেন।
সর্বদলীয় উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমেই বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে।
প্রথমেই সব নির্বাচন কমিশনারকে পদত্যাগ করতে হবে। সর্বদলীয় উপদেষ্টা পরিষদের সুপারিশ অনুযায়ী- স্বাধীন, গ্রহণযোগ্য ও সক্রিয় নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। এরপরই রাষ্ট্রপতি অর্ডিন্যান্স জারি করে সর্বসম্মত সুপারিশে আরপিও সংশোধন করে এবং নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করে ইভিএম বাতিল ও নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা নেবেন।
সর্বদলীয় উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমেই বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে।
লেখক : আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ