হিমালয় রিপোর্ট: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ৩৭ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশে করোনায় মারা গেছেন ৭৪৬ জন। এ ছাড়া দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৫৫ হাজার ১৪০ জন রোগী রয়েছেন। গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৯৫ জন। আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৫৯০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৪৭০ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ২১৬ জন কম আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৯১১ জন। নমুনা পরীক্ষায় আজ আক্রান্তের হার ২১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২২ দশমিক ৯১ শতাংশ। সোমবার ছিল ২০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
শনাক্ত বিবেচনায় আজ সুস্থতার হার ২১ দশমিক ০২ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের দিন সুস্থতার হার ছিল ২১ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। সোমবার সুস্থতার হার ছিল ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সর্বাধিক ১৫ হাজার ১০৩টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৯৫০টি। গতকালের চেয়ে আজ ১৫৩টি নমুনা বেশি সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ৫০টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৫১০টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৭০৪টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১৯৪টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৩টি।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী। ১৯ জন ঢাকা বিভাগে, ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগে, ২ জন রংপুর বিভাগে এবং ১ জন করে সিলেট ও খুলনা বিভাগে মারা গেছেন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ৩১ জন এবং বাসায় ৫ জন মারা গেছেন। মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন ১ জন।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩৯৫ জনকে। বর্তমানে মোট আইসোলেশনে আছেন ৬ হাজার ৪৯৮ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘণ্টায় ১৩৭ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৫৪৪ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২টি। রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে করোনা ডেডিকেটেড ২ হাজার বেডের হাসপাতালে রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম পর্যায়ে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৪২৮ জনকে। এখন পর্যন্ত মোট ২ লাখ ৯২ হাজার ৮১৩ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ১৪৫ জন এবং এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮৫ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন মোট ৫৭ হাজার ৮২৮ জন।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) গত ২৪ জানতে সংগৃহিত হয়েছে ৯ হাজার ৯০৭টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ২৫ লাখ ৯ হাজার ১৪২টি। গত ২৪ ঘন্টায় বিতরণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৮শ’টি। এ পর্যন্ত মোট বিতরণ করা হয়েছে ২১ লাখ ৭০ হাজার ৫২৩টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৬টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৯২ লাখ ৫০ হাজার ৫৭৭টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ২৫৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৫ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিআর হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ৪ হাজার ৫৪০ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৩৩৩ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৮৩ হাজার ৮৪৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ২৫৭ জন এবং এ পর্যন্ত ৮ হাজার জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ১৯৮ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ২৪২ জন এবং এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩২০ জন মারা গেছেন ।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩৭ জন মারা গেছেন
HimalayJun 03, 2020জাতীয়, সাম্প্রতিক, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা0
Previous Postক্যান্সার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাঁকরোল
Next Postচিকিৎসকদের ফ্রি প্রেসক্রিপশন সফটওয়্যার সুবিধা দিচ্ছে জিলসফট
Related articles
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত পরিবর্তন নেই স্টাফ রিপোর্টার (১০ মিনিট আগে) ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৬:১৪ অপরাহ্ন mzamin facebook sharing button twitter sharing button skype sharing button telegram sharing button messenger sharing button viber sharing button whatsapp sharing button প্রবল আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। এর মাধ্যমে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজন এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে নতুন আইনে শাস্তি কিছুটা কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। তাই শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এ আইনে রয়েই গেছে। বুধবার পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতি করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি, বরং তা আগের মতোই রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ও ২৮ ধারা দুটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে ধারা দুটি বাতিলের আহ্বান করা হয়েছিল। শাস্তি কমিয়ে এই দুটি বিধান রেখে দেয়ায় এর অপপ্রয়োগ ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের সুযোগ থেকেই যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটি কার্যকর হলে আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভারসহ সবকিছু জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত এক ধরনের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞাপন আইনের চারটি ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। সাইবার-সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ চায়, ডিজিটাল বা সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের শাস্তি হোক। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশির ভাগ ধারা সন্নিবেশিত থাকায় এই আইন কার্যকর হলে পূর্বের ন্যায় তা আবারও সাংবাদিক নির্যাতন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।
HimalaySep 20, 2023