ভয়াবহ দাবানলের কবলে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এমন অবস্থায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে পানির পরিমাণ বাড়াতে দশ হাজার বন্য উটকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছ। কারণ এসব উট প্রচুর পরিমাণে পানি পান করে।
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় বুধবার থেকে প্রশিক্ষিত বন্দুকধারী দিয়ে এই কাজ শুরু হবে। হেলিকপ্টার থেকে বন্য উটগুলিকে গুলি করে হত্যা করা হবে।
এ বিষয়ে আদেশ দিয়েছেন দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার আনানজু পিতজানৎজাতজারা ইয়ানকুনিৎজাতজারা ল্যান্ডস (এওয়াইপি) এলাকার এক আদিবাসী নেতা।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে , বুধবার থেকে শুরু হলেও দশ হাজার উট হত্যা করতে বেশ কয়েকদিন সময় লেগে যাবে।
উট হত্যা করার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার ওই এলাকা প্রচণ্ড খরাপ্রবণ। সেখানে স্বাভাবিকভাবেই পানির সংকট থাকে।
এমতাবস্থায় উটগুলো প্রচুর পরিমাণে পানি পান করায় সেই সংকট আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে।
এছাড়া পানির খোঁজে বিশাল এলাকাজুড়ে এসব উট বিচরণ করায় পরিবেশ সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। এমনকি মিথেন গ্যাস সৃষ্টির জন্যও এসব উট দায়ী।
এওয়াইপির নির্বাহী বোর্ডের সদস্য মারিতা বেকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমরা যে অঞ্চলে থাকি সেখানে খুব গরম পড়ে। খুবই অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে আছি।
এর মধ্যে উটগুলোর উৎপাত আমাদের বিষিয়ে তুলেছে। তারা পানির জন্য ঘরবাড়িতে হানা দিচ্ছে, বেড়া ভেঙে দিচ্ছে। ক্ষেত মাড়িয়ে এসে ফসলের ক্ষতি করছে।
দেশটির জাতীয় বন্য উট ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিভাগের দাবি, এই উটদের সংখ্যা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে প্রতি নয় বছরে সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্যও উট দায়ী।
কার্বনডাই অক্সাইড নিয়ন্ত্রণে কাজ করা কার্বন ফার্মিং স্পেশালিস্টস রিজেনকোর প্রধান নির্বাহী টিম মুরে বলেন ,
এক মিলিয়ন উট প্রতিবছর এক টনের সমপরিমাণ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী। অর্থাৎ , ৪ লাখ গাড়ি থেকে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়, সেই পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড সৃষ্টির জন্য দায়ী উট।
অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে এখন পর্যন্ত ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া ধারণা করা হচ্ছে, দাবনলে ৫০ কোটি বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে।