কিছু সমুদ্র সৈকত তাদের তাপমাত্রা এবং বালি রঙের জন্য বিখ্যাত, আর কিছু সৈকত বিখ্যাত তাদের দীর্ঘতার জন্য। আপনারা অনেকই হয়তো ভাবছেন যে আরে এটা তো সবাই জানে। কক্সবাজার হলো বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত। তবে কথাটা পুরোপুরি সঠিক নয়। কারন এটি বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত নয় এটি বিশ্বের দীর্ঘতম ‘প্রাকৃতিক বালি’র সৈকত। অবাক হলেন? তাহলে বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত কোনটি? চলুন নিচে দেখে নেই বিশ্বের দীর্ঘতম ৫টি সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে:
১. প্রায়া ডো ক্যাসিনো বিচ: প্রায় ১৫০ মাইল দীর্ঘ ব্রাজিলের প্রায়া ডো ক্যাসিনো বিচই বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। এই সৈকত এতটাই দীর্ঘ যে, এটি রিও গ্র্যান্ডে সমুদ্র বন্দর থেকে উরুগুয়ে সংলগ্ন চুই প্রবাহ মুখ পর্যন্ত প্রসারিত। এটি নিউইয়র্ক স্টেট কিংবা নিউ জার্সি স্টেট এর সমগ্র উপকূলের চাইতেও দীর্ঘতর। দৈর্ঘ্য ছাড়াও সমুদ্র সৈকতটি বিখ্যাত এর সাদা বালির জন্য। আর অতিথি পরায়ণ স্থানীও এবং উষ্ণ তাপমাত্রা তো আছেই। তবে এখানকার তাপমাত্রা অধিকাংশ সময়ই গরম। তবে সমুদ্র পাড়ে এসে কে গরম নিয়ে থাকবে? সেখানে তো পানি আর পানি। আর তাই সৈকতে রয়েছে বিভিন্ন খেলাধুলা সহ আরো অনেক এক্টিভিটি। এর মধ্যে, সার্ফিং সবথেকে জনপ্রিয়।
২. নাইন্টি মাইল বিচ: তালিকার পরবর্তী সৈকতটির নাম নাইন্টি মাইল সৈকত। নাম দেখেই ধারণা করা যায় যে, এই সমুদ্র সৈকতটি ৯০ মাইল দীর্ঘ। এর অবস্থান অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের জিপসল্যান্ড অঞ্চলে এবং বাস স্ট্রেইট থেকে জিপসল্যান্ডের হৃদগুলোকে পৃথক করে রেখেছে। উপকূলের কাছাকাছিই রয়েছে ছোট ছোট কিছু শহর। তবে সৈকতটি বিশেষ করে ডলফিন এবং তিমি শিকারী, সাঁতারু এবং জেলেদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু সৈকতে সার্ফিং বা বেশি দূরে সাঁতার করার অনুমতি নেই। তবে রিল্যাক্স বা ফটোগ্রাফীর জন্য সৈকতটি যথোপযুক্ত স্থান। তাহলে? বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত কোনটি?
৩. কক্সবাজার: কক্সবাজার বিশ্বের ৩য় দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত । তবে এটি বিশ্বের সবেচেয় দীর্ঘতম “প্রাকৃতিক বালি” র সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণাংশে ১২০ কি.মি. কিংবা ৭৫ মাইল জুড়ে বিস্তৃত। বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষন হলেও বিশ্বের অন্যান্য পর্যটকরা কক্সবাজার সম্পর্কে খুব কমই জানে। কেননা বেশিরভাগ পর্যটকদের লিস্টেই বাংলাদেশের নামটা থাকে না। আর তাছাড়া বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের অব্যবস্থাপনা তো আছেই। কক্সবাজারে লাবনি, হিমছড়ি এবং ইনানি নামে পর্যটকদের জন্য তিনটি স্পট রয়েছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষনীয় স্পট হলো ইনানি বিচ স্পট। পর্যটকদের জন্য আছে দুইটি ফাইভ স্টার হোটেল এবং অসংখ্য হোটেল-মোটেল। এছাড়া সমুদ্র সৈকত এর কাছেই পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ঝিনুক মার্কেট যেখানে ঝিনুকের বিভিন্ন জিনিস এবং গ্রামীণ শিল্প পাওয়া যায়।
৪. পাড্রে আইল্যান্ড ন্যাশনাল সীশোর: বিশ্বের ৩য় দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হলো পাড্রে আইল্যান্ড ন্যাশনাল সীশোর। এটি আমেরিকার দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০ মাইল। এর অবস্থান পাড্রে আইল্যান্ডে যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যারিয়ার আইল্যান্ড। সৈকতটি এর সাদা বালি এবং বিভিন্ন সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রজাতির প্রজনন কেন্দ্রের জন্য সুপরিচিত। সৈকতের অধিকাংশ স্থানই অনুন্নত হলেও এখানে ক্যাম্পিং এর সুবিধা রয়েছে। তবে সৈকতের বেশীরভাগই অংশেই চার-চাকাচালিত যানবাহন ছাড়া চলাচল নিষিদ্ধ।
৫. প্লায়া নভিয়েরো: বিশ্বের ৫ম দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হলো প্লায়া নভিয়েরো। এটি মেক্সিকোর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬ মাইল। এর অবস্থান মেক্সিকোর টেকুয়েলার নায়ারিটে। এটি মেক্সিকোর মূল ভূখণ্ড থেকে ১০০ মিটার দূরের একটি দ্বীপে অবস্থিত এবং মূল ভূখণ্ডের সাথে সেতু দ্বারা সংযোগ স্থাপিত। এর বালি খুবই সূক্ষ্ম। পানি খুবই শান্ত এবং সমগ্র বছর জুড়েই কিছুটা উষ্ণ।