মাও: মুহা : সাইফুল ইসলাম ফুয়াদ: রহমাত, বরকত ও মাগফিরাতের সওগাত নিয়ে পবিত্র মাহে রমাদান আমাদের মাঝে এসে আবার ফেরার পথে। মহান রবের এই ক্ষমার মৌসুমেও কতিপয় লোক এই ক্ষমা থেকে বঞ্চিত। তাদের রোজা,তারাবীহ, দোয়া ও জিকির – আজকারসহ কোন আমলই আল্লাহর দরবারে কবুল হয়না। অবশ্য রাসুল স: বলেছেন, ” সে ব্যক্তির নাক ধুলায় মলিন হোক, যার নিকট রমাদান এসে চলে গেল অথচ তার গুনাহ মাফ হয়নি।” (মুসলিম -২৫৫১) হযরত আবু হুরায়রা (রা) বর্ণিত,রাসুল স: বলেন, ” কতেক রোজাদার রয়েছে, যাদের রোজায় উপবাস ছাড়া কিছুই তাদের জন্য নেই ; কতেক নৈশ ইবাদতকারী রয়েছে, যাদের নৈশ ইবাদতে বিনিদ্রা ছাড়া কিছুই তাদের জন্য নেই।” ( নাসায়ী: ৩২৪৯, ইবনেমাজা ১৬৯০)
গুনাহ মাফ না হওয়া বা সাওম কবুল না হওয়ার মৌলিক কারণগুলো।
১। হালাল আহার ও ব্যবহার: মহান আল্লাহ সকলকে হালাল রুজি ভক্ষণ করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ” হে মানব মন্ডলী, তোমরা হালাল ও পবিত্র বস্তু হতে ভক্ষণ কর। [সুরা বাকারা ১৬৮]
সুতারাং কোন ব্যক্তি যদি তার পানাহার, পোশাক, আরাম-আয়েসের বস্তু ইত্যাদিতে হালাল – হারাম, বাছাই না করে চলে তার কোন ইবাদত ও দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হবেনা। রাসুল স: বলেন, ” তার ( যার) খাবার হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং হারাম দিয়ে তার রক্ত – গোস্ত গঠিত; অতএব কী ভাবে তার দোয়া ( ইবাদত) কবুল হবে? ” (মুসলিম ১০১৫)
২। মিথ্যা কথা ও কাজ: মিথ্যা সকল গুনাহের মূল। মিথ্যা বলতে বুঝায় প্রতারণা,ওয়াদা ভঙ্গ,গীবত ইত্যাদি। কুরআন ও হাদীসে যে সব কবিরা গুণাহের কথা বলা হয়েছে মিথ্যা তার মধ্যে অন্যতম। আল্লাহ বলেন, ” তোমরা মিথ্য কথা থেকে বিরত থাক”।[ সুরা হজ্জ : ৩০] ” যে মিথ্যাবাদী তার উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক “। [ আল ইমরান :৬১ ] রাসুল স: বলেন, ” যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে
পারল না, তার শুধু মাত্র পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই”। [ বুখারি : ৬০৫৭]
৩। অশ্লীলতা : সাওম ব্যার্থ হওয়ার অন্যতম কারন হল অশ্লীলতা । কোন ব্যক্তি যদি কটু কথা বলে, মন্দ আচারণ করে, কিংবা ঝগড়াফাসাদে লিপ্ত হতে চায়, সে ক্ষেত্রে এসব আচারণ এড়িয়ে যেতে হবে। রাসুল স: বলেন, ” কেউ যদি তার ( রোজাদারের) সাথে ঝগড়া করতে চায় অথবা গালি দেয়, তবে সে যেন দুইবার বলে আমি রোজাদার। “[ বুখারি :১৮৯৪]
সুতারাং যথন কোন রোজাদারের মধ্যে উক্ত বিষয় সমুহ তথা হারাম আহার, মিথ্যা কথা ও কাজ, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, ঝগড়াফাসাদ ইত্যাদি পাওয়া যাবে তখনই তার রোজা ব্যর্থতায় পরিণত হবে বা আল্লাহ কবুল করবেন না। সাওম কবুলের নিমিত্তে উল্লেখিত নিষিদ্ধাচারণগুলো পরিহার করা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দাবি।
লেখক : মাও: মুহা : সাইফুল ইসলাম ফুয়াদ।
ইসলামি গবেষক, গীতিকার ও শিক্ষক দ: বড় মোকামিয়া তাহেরিয়া দা: মাদ্রাসা,বরগুনা।