মিয়ানমারে কারাবন্দী রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের সাজার বিরুদ্ধে আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সরকারি গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় ওই দুই সাংবাদিককে। আলোচিত এ ঘটনাটি মিয়ানমারের গণতন্ত্রের পথে পরিবর্তনের যাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সো নেইং দুই সাংবাদিকের আপিল খারিজ করে বলেন, তাঁদের সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, সিদ্ধান্ত এটাই থাকবে, তাঁদের আপিল খারিজ করা হলো। আদালতের শুনানিতে আজ দুই সাংবাদিককে হাজির করা হয়নি।
১০ রোহিঙ্গা পুরুষ ও ছেলেকে হত্যার ঘটনা তদন্ত করার সময় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন (৩৩) ও কিয়াও সো ওওকে (২৯) গ্রেপ্তার করা হয়। ১৬ মাসের বেশি সময় ধরে তাঁরা বন্দী রয়েছেন।
দুই সাংবাদিকের করা রোহিঙ্গা হত্যায় সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা, আগুন লাগানো ও লুটপাটের প্রতিবেদন গত সপ্তাহে পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছে।
দুই সাংবাদিকের পক্ষে তাঁদের আইনজীবীরা আবেদনে জানান, পুলিশের অভিযোগে অপরাধ সংঘটনের প্রমাণ ও সাক্ষ্যের অভাব রয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের খবর সংগ্রহের সময় তাঁরা কিছু দলিল–দস্তাবেজ সংগ্রহ করেছিলেন। ইয়াঙ্গুন শহরের উপকণ্ঠে পুলিশের নিমন্ত্রণে নৈশভোজে ডেকে তাঁদের আটক করা হয়। ইয়াঙ্গুনের জেলা জজ আদালত দুই সাংবাদিককে সরকারি গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের দায়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে দোষী সাব্যস্ত করে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। এ বছরের জানুয়ারি মাসে ইয়াঙ্গুন হাইকোর্টে দুই সাংবাদিক সাজার বিরুদ্ধে আপিল করলে তা খারিজ করা হয়।
আজ এক বিবৃতিতে রয়টার্সের প্রধান কাউন্সেল গেইল গোভ বলেছেন, ‘ওয়া লোন এবং কিয়াও সো ওও কোনো অপরাধ করেননি। তাঁরা কোনো অপরাধ করেছেন এমন কোনো প্রমাণও নেই। বরং সত্য সংবাদ তুলে আনার জন্য পুলিশের সাজানো মামলার শিকার হয়েছেন তাঁরা। যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের মুক্ত করার জন্য আমাদের যা করা দরকার তা করতে থাকব।’
এদিকে এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য সরকারের মুখপাত্রকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।