শায়েখ হাসান জামিল (হাফিজাহুল্লাহ্): শয়তান আমাদের চিরশত্রু, যার চূড়ান্ত টার্গেট মানুষকে মুশরিক বানিয়ে জাহান্নামে পাঠানো। তার চক্রান্তের ফাঁদ হয় ভিন্ন ভিন্ন। বাংলাদেশী মুসলিমদের ধ্বংসে তার চক্রান্তের অন্যতম ফাঁদ হচ্ছে বাঙালী চেতনা! এ চেতনার নামে নানা কৌশলে সে আমাদের মুশরিক বানানোর চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তারই অংশ হচ্ছে পহেলা বৈশাখ! উম্মতের কাণ্ডারী ওলামায়ে কেরামের সামনেও বিশাল দায়িত্ব; উম্মতকে শিরক থেকে বাঁচাতেই হবে ইনশা-আল্লাহ! তাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এ বিষয়ে উম্মাহকে সচেতন করে তোলা অপরিহার্য কর্তব্য। বিশেষ করে খতীব মহোদয়গণ জুময়া’সহ বিভিন্ন খুতবায় নিতে পারেন জোরালো ভূমিকা! বৈশাখের মৌলিক সাতটি প্রোগ্রামকে সামনে নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
১. মঙ্গল শোভাযাত্রা
২. ছায়ানটের বৈশাখীবরণ
৩. লাল সাদা পোষাকের মহত্ত্ব
৪. অবাধ মেলামেশা
৫.উল্কি আঁকাসহ নানা অনৈসলামিক কাজ!
৬. অপচয়
৭. গরিব জনগোষ্ঠীর সাথে উপহাস।
সূরা আ’রাফের ১৪/১৫ নং আয়াত দিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্ব পাওয়া দরকার শিরকের বিষয়গুলো। যেমন:
(ক) লাল সাদার সাথে বাঙালীর কী সম্পর্ক? এটা তো শাখা সিঁদুরের কালার! তাহলে কি কৌশলে আমাকে শাখাসিঁদুরে অভ্যস্ত করা হচ্ছে?
(খ) রমনা বটমূলে ছায়ানটের শিল্পীরা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে প্রস্তুত, প্রস্তুত শ্রোতারা, অপেক্ষা কেবল সূর্য উঠার, সূর্য উঠার অপেক্ষায় মুসলমান থাকতে পারে? এটা তো সূর্য পুজারীদের কাজ! মুসলমান সূর্য উঠলে ইবাদত বন্ধ করে দেয়। কারণ নবীজী সা. সূর্য উঠা আর ডুবার সময় নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন, যেনো আমাদের ইবাদত সূর্যপূজারীদের সাথে মিলে না যায়, আর সেই মুসলমান প্রত্যুষে ফজরের সালাহ বাদ দিয়ে সূর্য উঠার অপেক্ষায় থাকবে!
(গ) সূর্য উঠার সাথে সাথেই রবি ঠাকুরের প্রার্থণামূলক সঙ্গীত “এসো হে বৈশাখ এসো……” দিয়ে শুরু হবে বর্ষবরণ। ঠাকুরের প্রার্থনা কি এক আল্লাহর কাছে! ওহে মুসলমান তুমিও সে মুশরিকের ভাষায় প্রার্থনা করবে? এই গানটির মধ্যে শিরক স্পষ্ট। কারণ তার একটি কলি হলো “অগ্নিস্নানে সুচি হোক ধরা” অর্থাৎ আগুনে গোসল দিয়ে গোটা জগত পবিত্র হোক। আগুন পবিত্র করার ক্ষমতা রাখে এ বিশ্বাস হিন্দুদের, আর তাই মৃত্যুর পর আগুনে পুড়িয়ে পবিত্র করে; ওহে মুসলমান তুমিও কি সে বিশ্বাসে বিশ্বাসী! আসতাগফিরুল্লাহ।
(ঘ) সবচেয়ে ভয়ঙ্কর শিরক হয় মঙল শোভাযাত্রায়। এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে সকল অমঙ্গল দূর করবে। মঙ্গল অমঙ্গলের মালিক কে? এখানে প্রার্থনাটা কার কাছে? সেটা বুঝতে হিন্দুদের একটা বিশ্বাস সম্পর্কে জানতে হবে। হিন্দুদের এক দেবতার নাম বিষ্ণু দেবতা, যার পত্নী হচ্ছে লক্ষ্মীদেবী। যার পাঁচ কন্যা; পদ্মা, পদ্মালয়া, ইন্দিরা, শোভা, কমলা। তাদের বিশ্বাস সমস্ত মঙ্গলের মালিক হচ্ছে লক্ষ্মী দেবী, যার বাহন হলো পেচা। চারুকলার সোনার ছেলেরা বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তির সাথে পেচার মূর্তিটিও ঢুকিয়ে দেয় মঙ্গল শোভাযাত্রায়।
এবার ভাবুন, পেচা কি বাংলায় কথা বলে? না পান্তা ইলিশ খায়? পেচার সাথে বাঙালীর কী সম্পর্ক? আসলে সম্পর্ক বাঙ্গালীর সাথে নয়, লক্ষ্মীদেবীর বাহন রেডি করে আহবান করা হচ্ছে তাকে। কারণ সে না আসলে মঙল বিতরণ করবে কে? লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ..
আসলে শয়তান যদি আমাদের পূজামণ্ডপে ডাকতো আমরা তো যেতাম না, তাই সে কৌশল পরিবর্তন করে আমাকে দিয়ে শিরক ঠিকই করাচ্ছে, কিন্তু নাম দিচ্ছে বাঙালী চেতনা! এভাবেই সাজাতে পারেনা জুম’আর খুতবা। কাউকে উপদেশ দেওয়া নয়, মনে করুন আমার পড়াটা শুনালাম। সাথে আমার মতো কমজানা মানুষ গুলোও একটু পড়ে নিলো!