আরিফ হোসেন: ভ্রমণের উদ্দেশ্য জানার পূর্বে আমরা ভ্রমণ কি তা নিয়ে একটু জেনে নেই। ভ্রমণ হচ্ছেঃ ভৌগোলিক স্থানের মধ্যে গতিবিধি বা চলন যা, মানুষ একস্থান থেকে অন্য স্থানে পায়ে হেঁটে, গাড়িতে, সাইকেলে, ট্রেনে, লঞ্চে কিংবা প্লেনে করে যায়। ভ্রমণে আপনি সাথে করে ট্রাভেল ব্যাগ, লাগেজ নিতে পারেন আবার নাও নিতে পারেন। আবার, যাত্রা পথে কোথাও কিছু সময়ের জন্য বা কয়েকদিনের জন্য অবকাশ যাপন কেও ভ্রমণ বলা যেতে পারে।
শিক্ষা সফর
আমরা প্রায়শই দেখে থাকি যে বিভিন্ন প্রাইমারী, কিন্ডারগার্টেন স্কুল থেকে শুরু করে হাইস্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে শিক্ষা সফরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করে থাকে। এটাকেই শিক্ষার সফর বলা হয়ে থাকে।
শিক্ষা সফর কি?
আবার সংক্ষেপে এভাবেও বলা যায়ঃ শিক্ষার উদ্দেশ্যে যে সফর সেটাকেই শিক্ষা সফল বলা হয়ে থাকে।
তবে শিক্ষা সফরে কোথায় যাওয়া যাবে সেটার কোন নির্দিষ্ট স্থান বা লোকেশন নেই। সেটা নির্ভর করে যারা শিক্ষা সফরে যাবেন সেই সব শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের উপর।
বাংলাদেশের সেরা ৫০ টি দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র
শিক্ষা সফর প্রয়োজন কেন
ভ্রমণ আমাদের আনন্দ দেবার পাশাপাশি আমাদের একঘেয়েমি দূর করতে সাহায্য করে। আনন্দ দেওয়া এবং একঘেয়েমি দূর করার পাশাপাশি ভ্রমণ আমাদের নানা বিষয়ে শিক্ষাও দিয়ে থাকে। ভ্রমণে অনেক কিছু শিখার রয়েছে।
আমারা স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে ভূগোল, ইতিহাস পড়ে অনেক পুঁথিগত বিদ্যা অর্জন করি ঠিকই কিন্তু সে জ্ঞান পরিপূর্ণ নয়।
তাইতো পৃথিবী এবং তার ভূখণ্ড সম্পর্কে জানার জন্য প্রয়োজন ভ্রমণ। কারন, পৃথিবী কেবল মাত্র ক্যালেন্ডারের বা বইয়ের পাতার কতগুলি রেখা নয়। এর বাহিরেও বিশাল এক পৃথিবী রয়েছে।
ভূগোল, ইতিহাস এর বাইরেও উন্মুক্ত খোলা বিশাল আকাশের নিচে জীবন্ত প্রকৃতি, দেশ, পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র দেখে এবং তার অধিবাসীদের প্রত্যক্ষ স্পর্শ লাভ করে, তাদের জীবনধারা সম্পর্কে জেনে আমরা যে জ্ঞান পাই বা জ্ঞান লাভ করি সেটাই হল প্রকৃত জ্ঞান। এর জন্য শিক্ষা সফর এর বিকল্প নেই।
শিক্ষামূলক ভ্রমণের উদ্দেশ্য
মহামানস এর একটি বিখ্যাত উক্তি রয়েছেঃ “শিক্ষামূলক ভ্রমনে আমারা এখানে এসেছি, উচ্চ থেকে আরো উচ্চ চেতনা বা জ্ঞান লাভের জন্য। জ্ঞান অভিজ্ঞতা লাভের মধ্য দিয়ে আমরা যত বেশি চেতনা সমৃদ্ধ হয়ে উঠতে পারবো, তত বেশি লাভবান হবো।”
একটি বিখ্যাত কবিতা বা উক্তি রয়েছে, হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে, সিংহল সমুদ্র থেকে মালয় সাগরে অনেক ঘুরেছি আমি।
চাইলে ভ্রমণ নিয়ে কবিতা গুলো পড়ে আসতে পারেন।
শিক্ষামূলক ভ্রমণের উদ্দেশ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে এর অনেক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
ভ্রমণ বর্তমানে শিক্ষার একটি অপরিহার্য অঙ্গরূপে স্বীকৃত পেয়েছে। কারন একমাত্র ভ্রমনেই শিক্ষার্থীরা পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ, ভৌগলিক পরিচিতি এবং সেখানকার অধিবাসীদের জীবনযাত্রার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে থাকে।
ভ্রমণে শিক্ষার্থীদের পৃথিবী সম্পর্কে অনেক কিছু ভাবতে শিখায়। তারা অবাক হয় পৃথিবীর রূপ বৈচিত্র দেখে। তারা এটা জানতে পারে যে তাদের অনেক কিছু শিখার বাকি রয়েছে।
ভ্রমণে রয়েছে দেশ প্রেম। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেনঃ প্রকৃত দেশভ্রমণ সৌভ্রাতৃত্ব বোধের জন্ম দেয়।
তাই সবশেষে বলব, শিক্ষা সফর করে বা বন্ধুদের সাথে অথবা পরিবার বা, একা হলেও ভ্রমণ করা উচিত আপনার। সময় পেলে ভ্রমণে ছুটে যান। কারন, ভ্রমণে আনন্দ, ভ্রমনেই মুক্তি।
Related articles
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত পরিবর্তন নেই স্টাফ রিপোর্টার (১০ মিনিট আগে) ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৬:১৪ অপরাহ্ন mzamin facebook sharing button twitter sharing button skype sharing button telegram sharing button messenger sharing button viber sharing button whatsapp sharing button প্রবল আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। এর মাধ্যমে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজন এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে নতুন আইনে শাস্তি কিছুটা কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। তাই শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এ আইনে রয়েই গেছে। বুধবার পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতি করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি, বরং তা আগের মতোই রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ও ২৮ ধারা দুটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে ধারা দুটি বাতিলের আহ্বান করা হয়েছিল। শাস্তি কমিয়ে এই দুটি বিধান রেখে দেয়ায় এর অপপ্রয়োগ ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের সুযোগ থেকেই যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটি কার্যকর হলে আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভারসহ সবকিছু জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত এক ধরনের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞাপন আইনের চারটি ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। সাইবার-সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ চায়, ডিজিটাল বা সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের শাস্তি হোক। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশির ভাগ ধারা সন্নিবেশিত থাকায় এই আইন কার্যকর হলে পূর্বের ন্যায় তা আবারও সাংবাদিক নির্যাতন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।
HimalaySep 20, 2023