উল্লেখযোগ্য খবর
সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত পরিবর্তন নেই স্টাফ রিপোর্টার (১০ মিনিট আগে) ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ৬:১৪ অপরাহ্ন mzamin facebook sharing button twitter sharing button skype sharing button telegram sharing button messenger sharing button viber sharing button whatsapp sharing button প্রবল আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি আলোচিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ। এর মাধ্যমে এই আইনটি সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদমাধ্যমের অংশীজন এত দিন যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছিলেন, সেটা যথার্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে নতুন আইনে শাস্তি কিছুটা কমানো এবং কিছু ধারার সংস্কার করা হয়েছে। তাই শুধু খোলস পরিবর্তন ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে গুণগত বা উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এ আইনে রয়েই গেছে। বুধবার পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩) স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতি করবে বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এখন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সাতটি ধারায় সাজা ও জামিনের বিষয়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। কিন্তু অপরাধের সংজ্ঞা স্পষ্ট করা হয়নি, বরং তা আগের মতোই রয়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১ ও ২৮ ধারা দুটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানির হাতিয়ার ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর থেকে ধারা দুটি বাতিলের আহ্বান করা হয়েছিল। শাস্তি কমিয়ে এই দুটি বিধান রেখে দেয়ায় এর অপপ্রয়োগ ও খেয়ালখুশিমতো ব্যবহারের সুযোগ থেকেই যাবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আইনটি কার্যকর হলে আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তল্লাশি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভারসহ সবকিছু জব্দ ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে পুলিশ। এর মাধ্যমে পুলিশকে কার্যত এক ধরনের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বিজ্ঞাপন আইনের চারটি ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। সাইবার-সংক্রান্ত মামলার সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ চায়, ডিজিটাল বা সাইবার মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের শাস্তি হোক। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশির ভাগ ধারা সন্নিবেশিত থাকায় এই আইন কার্যকর হলে পূর্বের ন্যায় তা আবারও সাংবাদিক নির্যাতন এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া নতুন কিছু হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।

প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে ডেঙ্গুর: অতিরিক্ত আইজিপির স্ত্রীসহ ৫ জনের মৃত্যু

প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আগের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গতকাল রোববার ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮৭০ জন। গত জুন মাসের ৩০ দিনে আক্রান্তের চেয়ে গতকাল তার চেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুর শিকার হয়েছে। জুন মাসে মোট আক্রান্ত ছিল ১৮৬৩ জন। অপর দিকে চলতি আগস্টের গত চার দিনে আক্রান্ত হয়েছে ছয় হাজার ৯৬৭ জন। এই সংখ্যাটি বিগত বছরের মোট আক্রান্ত থেকে মাত্র ৯৫৪ কম। গত জুলাই মাসের ৩১ দিনে আক্রান্ত হয় ১৫ হাজার ৬৫০ জন। সারা দেশে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে চিকিৎসাধীন আছে ৭৩৯৮ জন। অন্যান্য বছরে ডেঙ্গু কেবল রাজধানী অথবা অন্য বড় শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এ বছর দেশের সর্বত্রই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। এ দিকে ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন আরো চারজন। এদের মধ্যে গতকাল ঢাকায় অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন কোরেশীর স্ত্রী সৈয়দা আক্তার এবং ইডেন কলেজের ছাত্রী শান্তা আক্তার মারা গেছেন। এ ছাড়া খুলনায় স্কুলছাত্র ও বৃদ্ধা এবং নোয়াখালীর সেনবাগে প্রবাসী মৃত্যুবরণ করেন।
চিকিৎসকেরা আশঙ্কা করছেন, চলতি বছর হয়তো আর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ মশকনিধনে সিটি করপোরেশনের যে ঢিমেতালে প্রস্তুতি, তাতে তাদের পক্ষে আর এবার মশা নিধন সম্ভব নয়। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে বৃষ্টি কমে যেতে শুরু করবে এবং ডেঙ্গু ভাইরাসবাহী এডিস মশার উৎপাদনও কমতে থাকবে। আগামী বছরের জন্য আগেভাগে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা এখন থেকে করতে না পারলে পরবর্তীতে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কল্পনাও করা যাবে না। এখন পর্যন্ত মৃত্যু শতকের ঘর অতিক্রম করতে পারেনি। কিন্তু আগামী বছর কত যে মৃত্যু হবে তা গুণে শেষ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ২০০০ সালে প্রথম যখন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয় তখন আক্রান্ত হয়েছিল পাঁচ হাজার ৫৫১ জন। ২০০২ সালে ছয় হাজার ২৩২ জন, ২০০৪ সালে তিন হাজার ৯৩৪ জন, ২০০৬ সালে দুই হাজার ২০০ জন, ২০১৫ সালে তিন হাজার ১৬২ জন, ২০১৬ সালে ছয় হাজার ৬০ জন, ২০১৭ সালে দুই হাজার ৭৬৯ জন এবং ২০১৮ সালে ছিল সাত হাজার ৯২১ জন।
গতকাল যে ১৮৭০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে রাজধানীতে এক হাজার এবং রাজধানীর বাইরে ৮১৭ জন। সবচেয়ে বেশি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৩৪ জন। এ ছাড়া মিটফোর্ডে ৯৭ জন, শিশু হাসপাতালে ৩৯ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দীতে ৫৫ জন, হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ৩০, বারডেমে ১৩ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ জন, পুলিশ হাসপাতালে ১৭ জন, মুগদা হাসপাতালে ৮৩ জন, বিজিবি হাসপাতালে ৭ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৩৬, কুর্মিটোলা হাসপাতালে ১১৩ জনসহ অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালে ৪০০ জন। উল্লিখিত সবাই ডেঙ্গুর সাধারণ জ্বরে আক্রান্ত। এর বাইরে দুইজন ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে এবং একজন রয়েছে ডেঙ্গু হেমোরেজিকে আক্রান্ত। বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩৫, ইবনে সিনা হাসপাতালে ২০, স্কয়ার হাসপাতালে ১১, শমরিতায় ৮, ল্যাবএইডে ৮, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ২৬, গ্রিন লাইফে ২৭, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ২১ জন ভর্তি হয়েছেন।
অতিরিক্ত আইজিপির স্ত্রীর মৃত্যু : ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজি (ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) শাহাবুদ্দিন কোরেশীর স্ত্রী সৈয়দা আক্তার (৫৫) মারা গেছেন। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মো: সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সৈয়দা আক্তার গত শনিবার অসুস্থ হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনি রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সৈয়দা আক্তারের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। তিন ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জননী ছিলেন তিনি। ঢাকায় পরিবারের সাথে রাজারবাগের পুলিশ অফিসার্স বাসভবন মেঘনায় বসবাস করতেন তিনি।
শেবাচিমে ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ রোগী
বরিশাল ব্যুরো জানায়, দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। রোববার শেবাচিম হাসপাতালে ১৪৮ জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার এ সংখ্যা ছিল ১১৭ জন। হাসপাতালের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন ৪৪ জন রোগী। যার মধ্যে পুরুষ ২৪ জন, নারী ১৬ জন ও শিশু চারজন। অপর দিকে হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের কিট সঙ্কট থাকলেও শনিবার সকালে পর্যাপ্ত স্যালাইন এসে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
খুলনায় স্কুলছাত্র ও বৃদ্ধার মৃত্যু : খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় ডেঙ্গু জ্বরে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মঞ্জুর শেখ (১৫) নামের স্কুলছাত্র বেসরকারি হাসপাতালে এবং শনিবার রাত ১২টার দিকে খুমেক হাসপাতালে মর্জিনা বেগম (৬৫) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। ডেঙ্গুতে এই দুইজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন খুলনার সিভিল সার্জন ডা: এ এস এম আব্দুর রাজ্জাক। ডেঙ্গুতে এই প্রথম খুলনায় মৃত্যু ঘটল। খুলনা স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলের পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় ৯জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া বিভাগের ১০ জেলার হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রয়েছেন ৩৫৯ ডেঙ্গু রোগী।
মারা যাওয়া মঞ্জুর রূপসা উপজেলার কাজদিয়া সরকারি কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। সে উপজেলার টিএসবি ইউনিয়নের উত্তর খাজাডাঙ্গা গ্রামের সবজি বিক্রেতা বাবুল শেখ ওরফে বাবুর ছেলে। মঞ্জুর দুই ভাই-বোনের মধ্যে বড়। জানা গেছে, মঞ্জুর শেখ কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছিল। সাধারণ জ্বর ভেবে পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। কিন্তু কোনো উন্নতি না হওয়ায় শনিবার তাকে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নিতে বলেন। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরবর্তীতে খুলনা সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখান থেকে ফেরত দেয়া হয়। পরে নেয়া হয় গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোবিবার সকালে সে মারা যায়। অপর দিকে মর্জিনা বেগম দিঘলিয়া উপজেলার ব্রক্ষ্মগাতী গ্রামের ইসরাইল সরদারের স্ত্রী। তার স্বজনরা জানান, ডেঙ্গু ছাড়াও মর্জিনা বেগম লিভার রোগে আক্রান্ত ছিলেন। লিভারের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিনি।
মানিকগঞ্জে বাড়ছে রোগী : মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে মানিকগঞ্জে। শুরুতে শুধুমাত্র জেলা হাসপাতালে চাপ থাকলেও এখন প্রাইভেট হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ভর্তি হচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্যমতে জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩৭জন। এর মধ্যে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ১৫জন। মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা: লুৎফর রহমান জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৮০জন রোগী ভর্তি ছিল সেখানে। বর্তমানে ৫০জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সিভিল সার্জন ডা. মো: আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সিংগাইরে ৪ ও সাটুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচ রোগী ভর্তি রয়েছে। এ ছাড়া জেলা হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে অর্ধশত মানুষ ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে আসছেন।
নওগাঁ হাসপাতালে ২০জন : নওগাঁ সংবাদদাতা জানান, জেলায় গতকাল রোববার আরো ৪ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ৯ দিনে ৪২জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হলো। বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ২০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত নওগাঁ থেকে ১৬জনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আক্রান্ত ৪২ রোগীর মধ্যে ৩জন নওগাঁতেই আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান নওগাঁ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: রওশন আরা খানম।
ডেঙ্গু পরীক্ষার অজস্্র সুপারিশ : ফরিদপুর সংবাদদাতা জানান, সাধারণ জ্বরে আক্রান্তদের মাঝে ডেঙ্গু আতঙ্ক বিস্তারের প্রভাব পড়েছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগে। বিভিন্ন মহল থেকে জ্বরে আক্রান্ত হলেই হাসপাতালে ডেঙ্গু জীবাণু শনাক্তরণের জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে। এর ফলে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিটের সঙ্কট পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিভিল সার্জন এনামুল হক জানিয়েছেন, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আপাতত ডেঙ্গু শনাক্ত করার কিটের সমস্যা নেই। তবে বিভিন্ন সুপারিশের কারণে এর অপব্যবহার হচ্ছে। তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শের বাইরে গত শনিবার রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলের সুপারিশে মোট ৪২জনের রক্ত পরীক্ষা করে মাত্র একজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা গেছে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ডেঙ্গু শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা যাতে করতে না হয় সে ব্যাপারে তিনি সকল মহলের সহযোগিতা চেয়েছেন। এ দিকে ফরিদপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ২৬জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৬জন ও ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে দুইজন। ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা জানান, গত ২০ জুলাই থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ভর্তি হয়েছেন ১৬০জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ১০৯জন। সেখানে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে ২৩জন নিজ বাড়িতে থেকে আক্রান্ত হয়েছেন।
বি’বাড়িয়ায় পরীক্ষার উপকরণ নেই
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। রোববার পর্যন্ত মোট ৫৮জন লোক ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে আরো ১১জন। এ দিকে পরীক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণ না থাকায় শঙ্কামুক্ত হতে পারছে না রোগীরা। জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে হাসপাতালে মোট ১৮জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্ণার গঠন করা হয়েছে। সিভিল সার্জন মো: শাহ আলম জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে রোগীদের ফ্রি ডেঙ্গু পরীা করা হচ্ছে। শনিবার ১০০ রোগীর পরীা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩জনের ডেঙ্গু পাওয়া গেছে। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: শওকত হোসেন জানান, তাদের কিট সরবরাহ করা হয়েছে। তবে ফলোআপ পরীার জন্যে যে উপকরণ (ওয়ান জিএম এবং ওয়ান জিজি) এখনো সরবরাহ করা হয়নি। আক্রান্ত রোগীর ৫/৬ দিন পর পরীার জন্যে দরকার হয় এই উপকরণের।
রামেকে বাড়ছে রোগী
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। শনিবার থেকে গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ২৪ জন নতুন ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি হয়েছেন। রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা: সাইফুল ইসলাম ফেরদৌস সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রামেক হাসপাতালে এখন ৭২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন। তিনি জানান, গত ১৫ জুলাই থেকে রামেক হাসপাতালে ১৪৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *